ঢাকা , সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

নতুন শিক্ষাক্রমে তাল মেলাতে পারছেন না শিক্ষক-শিক্ষার্থী

  • সূর্যোদয় ডেস্ক:
  • আপডেট সময় ০৯:২৯:৩৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ জুন ২০২৩
  • ১১৩০ বার পড়া হয়েছে

নতুন শিক্ষাক্রমের সাথে এখনো তাল মেলাতে পারছেন না অনেক শিক্ষক ও শিক্ষার্থী। মাধ্যমিক পর্যায়ে দু’টি শ্রেণীতে ২০২৩ শিক্ষাবর্ষ থেকে এই শিক্ষাক্রম চালু হলেও অনেক প্রতিষ্ঠানে এখনো পুরনো নিয়মেই পাঠদান ও পরীক্ষাপদ্ধতি চালু রেখেছে। বিষয়টি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশির) দৃষ্টিগোচর হলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে সতর্কতাও জারি করেছে। নতুন শিক্ষাক্রম চালু হওয়া মাধ্যমিকের ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণীর অনেক শিক্ষক ও শিক্ষার্থী পুরনো নিয়মেই পঠন ও শিখন পদ্ধতিতেই শিক্ষাক্রম চালু রেখেছেন বলে দেশের বিভিন্ন জেলার স্কুল থেকে অভিযোগ আসছে। নতুন শিক্ষাক্রম সঠিকভাবে বাস্তবায়নের গাফিলতিতে কড়া সতর্কতা দিয়েছে মাউশি।

সূত্র মতে, ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের শুরু থেকেই নতুন পাঠ্যক্রম ও বাস্তবায়নের নির্দেশনা সঠিকভাবে ক্লাসে অনুসরণ করতে বেশ জোরেশোরেই তাগিদ দেয় মাউশি। যদিও প্রথম বছর হিসেবে মাধ্যমিকের শুধু ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণীতেই নতুন শিক্ষাক্রম চালু করা হয়েছে। নতুন এই শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের জন্য আগে থেকেই শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য প্রস্তুতিও নেয়া হয়। এরপর পর্যায়ক্রমে কয়েক দফায় সঠিক মূল্যায়ন পদ্ধতি বাস্তবায়নের জন্যও দেয়া হয় গাইডলাইন।

সংশ্লিষ্টরা জানান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে বছরের শুরুর দিকেই মাঠপর্যায়ে সংশ্লিষ্টদের করণীয় বিষয়ক একগুচ্ছ নির্দেশনাও পাঠিয়েছে মাউশি। এতে শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শ্রেণিশিক্ষক, প্রতিষ্ঠানপ্রধান, উপজেলা বা থানা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও আঞ্চলিক পর্যায়ের কর্মকর্তাদের করণীয় কী হবে, সেসব বিষয় উল্লেখ করা হয়।
অন্য দিকে সবার জানার সুযোগ সহজ করে দিতে মাউশির ওয়েবসাইটেও এই নির্দেশনাপত্রটি প্রকাশ করা হয়। গত জানুয়ারি থেকে প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণীতে নতুন শিক্ষাক্রম শুরু হয়েছে। আগামী বছর দ্বিতীয়, তৃতীয়, অষ্টম ও নবম শ্রেণীতে নতুন এই শিক্ষাক্রম চালু হবে। এরপর ২০২৫ সালে চতুর্থ, পঞ্চম ও দশম শ্রেণীতে চালু হবে। উচ্চমাধ্যমিকে একাদশ শ্রেণীতে ২০২৬ সালে এবং দ্বাদশ শ্রেণীতে ২০২৭ সালে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। মাউশির দেয়া নির্দেশনা মতে নতুন শিক্ষাক্রমে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের বড় অংশ হবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধারাবাহিকভাবে (শিখনকালীন)। তৃতীয় শ্রেণী পর্যন্ত পুরোটাই মূল্যায়ন হবে সারা বছর ধরে চলা বিভিন্ন ধরনের শিখন কার্যক্রমের ভিত্তিতে। চতুর্থ শ্রেণী থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত পাঁচটি বিষয়ে কিছু অংশের মূল্যায়ন হবে শিখনকালীন। বাকি অংশের মূল্যায়ন হবে সামষ্টিকভাবে, মানে পরীক্ষার ভিত্তিতে। সম্প্রতি অভিযোগ উঠেছে কোনো কোনো শিক্ষক মাউশির দেয়া ওই সহায়িকা অনুসরণ করছেন না। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর বলছে, প্রশিক্ষণে পাওয়া জ্ঞান, অভিজ্ঞতা ও শিক্ষক সহায়িকা অনুসারে ক্লাস না নেয়া শৃঙ্খলাপরিপন্থী। যেসব শিক্ষক সরকারি নির্দেশনা না মেনে নতুন শিক্ষাক্রমের ক্লাস নিচ্ছেন তাদের তথ্য জেলা শিক্ষা অফিসারের মাধ্যমে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরে পাঠাতে প্রতিষ্ঠানপ্রধানদের বলা হয়েছে।

যদিও বছরের শুরু থেকেই নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে শিক্ষক সহায়িকা, প্রশিক্ষণ লব্ধজ্ঞান ও অভিজ্ঞতার আলোকে নতুন শিক্ষাক্রমে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের ক্লাস নিতে ও মূল্যায়ন করতে স্কুলগুলোর শিক্ষকদের নির্দেশ দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর। কিন্তু এর পরও অনেক শিক্ষক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তা মানছে না বলে জানতে পেরেছে মাউশি। এরই প্রেক্ষিতে গত রোববার মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর থেকে এ বিষয়ে শিক্ষকদের সতর্ক করে আদেশ জারি করা হয়েছে। আদেশটি সব সরকারি-বেসরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও অধ্যক্ষদের পাঠিয়েছে অধিদফতর।

মাউশির সহকারী পরিচালক এস এম জিয়াউল হায়দার হেনরী সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষকদের নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে পাঁচ দিনের প্রশিক্ষণ, শিক্ষক সহায়িকা, মূল্যায়ন নির্দেশিকা দিয়েছে। এ ছাড়া মুক্ত পাঠের মাধ্যমে মূল্যায়ন সংক্রান্ত অনলাইনে কোর্স সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু লক্ষ করা যাচ্ছে, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনো কোনো শিক্ষক তা অনুসারে শিক্ষাথীদের পাঠদান করছেন না, যা চাকরি শৃঙ্খলার পরিপন্থী।

তিনি আরো জানান, প্রশিক্ষণ, শিক্ষক সহায়িকা অনুসরণ করে যেসব শিক্ষক শিক্ষার্থীদের পাঠদান করছেন না তাদের তথ্য প্রতিষ্ঠানপ্রধানদের সংশ্লিষ্ট জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার মাধ্যমে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের পাঠাবেন। একইসাথে যেসব শিক্ষক প্রশিক্ষণ লব্ধজ্ঞান ও শিক্ষক সহায়িকা অনুসারে পাঠদান করছেন না তারা এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানপ্রধান এ জন্য ব্যক্তিগতভাবে দায়ী থাকবেন।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

আজকের সূর্যোদয়

আজকের সূর্যোদয় প্রত্রিকায় আপনাদের স্বাগতম। ‍আমাদের নিউজ পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিয়ে আমাদের পাশে থাকুন।

বরিশালে মুজিবিয়ানের ৮৭ নেতাকে খুঁজছে গোয়েন্দা সংস্থা

নতুন শিক্ষাক্রমে তাল মেলাতে পারছেন না শিক্ষক-শিক্ষার্থী

আপডেট সময় ০৯:২৯:৩৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ জুন ২০২৩

নতুন শিক্ষাক্রমের সাথে এখনো তাল মেলাতে পারছেন না অনেক শিক্ষক ও শিক্ষার্থী। মাধ্যমিক পর্যায়ে দু’টি শ্রেণীতে ২০২৩ শিক্ষাবর্ষ থেকে এই শিক্ষাক্রম চালু হলেও অনেক প্রতিষ্ঠানে এখনো পুরনো নিয়মেই পাঠদান ও পরীক্ষাপদ্ধতি চালু রেখেছে। বিষয়টি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশির) দৃষ্টিগোচর হলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে সতর্কতাও জারি করেছে। নতুন শিক্ষাক্রম চালু হওয়া মাধ্যমিকের ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণীর অনেক শিক্ষক ও শিক্ষার্থী পুরনো নিয়মেই পঠন ও শিখন পদ্ধতিতেই শিক্ষাক্রম চালু রেখেছেন বলে দেশের বিভিন্ন জেলার স্কুল থেকে অভিযোগ আসছে। নতুন শিক্ষাক্রম সঠিকভাবে বাস্তবায়নের গাফিলতিতে কড়া সতর্কতা দিয়েছে মাউশি।

সূত্র মতে, ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের শুরু থেকেই নতুন পাঠ্যক্রম ও বাস্তবায়নের নির্দেশনা সঠিকভাবে ক্লাসে অনুসরণ করতে বেশ জোরেশোরেই তাগিদ দেয় মাউশি। যদিও প্রথম বছর হিসেবে মাধ্যমিকের শুধু ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণীতেই নতুন শিক্ষাক্রম চালু করা হয়েছে। নতুন এই শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের জন্য আগে থেকেই শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য প্রস্তুতিও নেয়া হয়। এরপর পর্যায়ক্রমে কয়েক দফায় সঠিক মূল্যায়ন পদ্ধতি বাস্তবায়নের জন্যও দেয়া হয় গাইডলাইন।

সংশ্লিষ্টরা জানান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে বছরের শুরুর দিকেই মাঠপর্যায়ে সংশ্লিষ্টদের করণীয় বিষয়ক একগুচ্ছ নির্দেশনাও পাঠিয়েছে মাউশি। এতে শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শ্রেণিশিক্ষক, প্রতিষ্ঠানপ্রধান, উপজেলা বা থানা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও আঞ্চলিক পর্যায়ের কর্মকর্তাদের করণীয় কী হবে, সেসব বিষয় উল্লেখ করা হয়।
অন্য দিকে সবার জানার সুযোগ সহজ করে দিতে মাউশির ওয়েবসাইটেও এই নির্দেশনাপত্রটি প্রকাশ করা হয়। গত জানুয়ারি থেকে প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণীতে নতুন শিক্ষাক্রম শুরু হয়েছে। আগামী বছর দ্বিতীয়, তৃতীয়, অষ্টম ও নবম শ্রেণীতে নতুন এই শিক্ষাক্রম চালু হবে। এরপর ২০২৫ সালে চতুর্থ, পঞ্চম ও দশম শ্রেণীতে চালু হবে। উচ্চমাধ্যমিকে একাদশ শ্রেণীতে ২০২৬ সালে এবং দ্বাদশ শ্রেণীতে ২০২৭ সালে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। মাউশির দেয়া নির্দেশনা মতে নতুন শিক্ষাক্রমে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের বড় অংশ হবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধারাবাহিকভাবে (শিখনকালীন)। তৃতীয় শ্রেণী পর্যন্ত পুরোটাই মূল্যায়ন হবে সারা বছর ধরে চলা বিভিন্ন ধরনের শিখন কার্যক্রমের ভিত্তিতে। চতুর্থ শ্রেণী থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত পাঁচটি বিষয়ে কিছু অংশের মূল্যায়ন হবে শিখনকালীন। বাকি অংশের মূল্যায়ন হবে সামষ্টিকভাবে, মানে পরীক্ষার ভিত্তিতে। সম্প্রতি অভিযোগ উঠেছে কোনো কোনো শিক্ষক মাউশির দেয়া ওই সহায়িকা অনুসরণ করছেন না। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর বলছে, প্রশিক্ষণে পাওয়া জ্ঞান, অভিজ্ঞতা ও শিক্ষক সহায়িকা অনুসারে ক্লাস না নেয়া শৃঙ্খলাপরিপন্থী। যেসব শিক্ষক সরকারি নির্দেশনা না মেনে নতুন শিক্ষাক্রমের ক্লাস নিচ্ছেন তাদের তথ্য জেলা শিক্ষা অফিসারের মাধ্যমে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরে পাঠাতে প্রতিষ্ঠানপ্রধানদের বলা হয়েছে।

যদিও বছরের শুরু থেকেই নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে শিক্ষক সহায়িকা, প্রশিক্ষণ লব্ধজ্ঞান ও অভিজ্ঞতার আলোকে নতুন শিক্ষাক্রমে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের ক্লাস নিতে ও মূল্যায়ন করতে স্কুলগুলোর শিক্ষকদের নির্দেশ দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর। কিন্তু এর পরও অনেক শিক্ষক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তা মানছে না বলে জানতে পেরেছে মাউশি। এরই প্রেক্ষিতে গত রোববার মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর থেকে এ বিষয়ে শিক্ষকদের সতর্ক করে আদেশ জারি করা হয়েছে। আদেশটি সব সরকারি-বেসরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও অধ্যক্ষদের পাঠিয়েছে অধিদফতর।

মাউশির সহকারী পরিচালক এস এম জিয়াউল হায়দার হেনরী সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষকদের নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে পাঁচ দিনের প্রশিক্ষণ, শিক্ষক সহায়িকা, মূল্যায়ন নির্দেশিকা দিয়েছে। এ ছাড়া মুক্ত পাঠের মাধ্যমে মূল্যায়ন সংক্রান্ত অনলাইনে কোর্স সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু লক্ষ করা যাচ্ছে, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনো কোনো শিক্ষক তা অনুসারে শিক্ষাথীদের পাঠদান করছেন না, যা চাকরি শৃঙ্খলার পরিপন্থী।

তিনি আরো জানান, প্রশিক্ষণ, শিক্ষক সহায়িকা অনুসরণ করে যেসব শিক্ষক শিক্ষার্থীদের পাঠদান করছেন না তাদের তথ্য প্রতিষ্ঠানপ্রধানদের সংশ্লিষ্ট জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার মাধ্যমে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের পাঠাবেন। একইসাথে যেসব শিক্ষক প্রশিক্ষণ লব্ধজ্ঞান ও শিক্ষক সহায়িকা অনুসারে পাঠদান করছেন না তারা এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানপ্রধান এ জন্য ব্যক্তিগতভাবে দায়ী থাকবেন।