ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার লাইসেন্স দেবে বরিশাল সিটি কর্পোরেশন

  • সূর্যোদয় ডেস্ক:
  • আপডেট সময় ০১:৩৭:৩০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৩
  • ১৩৫৬ বার পড়া হয়েছে

বরিশাল নগরীতে চলাচলরত অবৈধ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাকে (হলুদ) বৈধতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিটি কর্পোরেশন। বুধবার সিটি কর্পোরেশনের পক্ষে নগরীতে মাইকিং করে এই তথ্য জানানো হয়েছে। এই পরিবহনের বৈধতা অর্থাৎ লাইসেন্স পাওয়ার প্রাথমিক ধাপ হিসেবে সিটি কর্পোরেশনের এনেক্স ভবন থেকে আবেদনপত্র সংগ্রহ করতে বলা হয়। জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি ও পাসপোর্ট সাইজের এক কপি ছবি জমা দিয়ে ১৯ জানুয়ারি সকাল ৯ টা থেকে বিনামূল্যে এই ফরম নেওয়া যাবে।

সিটি কর্পোরেশনের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরে বরিশাল নগরীতে ১০ হাজারের বেশি অবৈধ অটোরিকশায় যাত্রী পরিবহন করছে। সম্প্রতি এর সংখ্যা আরও বেড়েছে ও যত্রতত্র স্থানে পার্কিং করা এবং যাত্রী ওঠানো নামানোর কারণে প্রায়শই নগরীতে যানজট তৈরি হচ্ছে। এতে নগরবাসী ভোগান্তিতে পড়তে হয়, হচ্ছে। এছাড়া হলুদ অটোরিকশা মালিক-শ্রমিকেরাও দীর্ঘদিন যাবৎ এই পরিবহনের বৈধতা অর্থাৎ লাইসেন্স দাবি করে নানান কর্মসূচি পালন করেছে।

সর্বশেষ নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যানে সমাবেশ করে সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহকে প্রধান অতিথি করে সেখানে মালিক-শ্রমিকেরা লাইসেন্সের দাবি রাখেন। অবশ্য ওই সময় মেয়র তাদের বৈধতা দেওয়ারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।

এরপর দীর্ঘ প্রক্রিয়া শেষে আজ বুধবার শহরে সিটি কর্পোরেশনের পক্ষে মাইকিং করে অটোরিকশা মালিকদের লাইসেন্স প্রাপ্তির আবেদন ফরম সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে।

নামপ্রকাশ না করার শর্তে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, অটোরিকশার বৈধতা নিয়ে সম্প্রতি সিটি মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ কর্মকর্তাদের নিয়ে একটি বৈঠক করেছেন। সেখানে সর্বসম্মতিক্রমে এই পরিবহনকে একটি শৃঙ্খলার মধ্যে নিয়ে আসতে লাইসেন্স দেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এবং বুধবার এই সংক্রান্তে একটি ঘোষণা বিজ্ঞপ্তিও জারি করেছে সিটি কর্পোরেশন। যদিও এই বিষয়ে মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ’র বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

একাধিক মালিক-শ্রমিক জানান, বিগত সময়ে লাইসেন্সবিহীন চলাচলের কারণে তাদের নানান হয়রানির সম্মুখিন হতে হয়েছে। কখনও ট্রাফিক পুলিশের হয়রানি, আবার কখন কথিত শ্রমিক সংগঠনের চাঁদাবাজিও মুখ বুঝে সহ্য করতে হয়েছে। কিন্তু অনুমোদন না থাকায় কোথাও প্রতিবাদ করার সুযোগ হয়নি। এমনকি বৈধতার দাবিতে আন্দোলন-সংগ্রাম করেও লাভ হয়নি।

শ্রমিক সংগঠনের নেতা লেদু সিকদারসহ বেশ কয়েকজন চালক জানান, শ্রমিক সমাবেশে সিটি মেয়র যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তা কিছুটা বিলম্বে হলেও রক্ষা করেছেন। এতে মালিক-শ্রমিকেরা খুশি হয়েছেন এবং মেয়রকে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য সাধুবাদও জানিয়েছেন।

পর্যবেক্ষক মহল বলছে- অবৈধ অটোরিকশাকে বৈধতা দিলে নগরীর সড়কে শৃঙ্খলা ফেরার পাশাপাশি সিটি কর্পোরেশনও বড় ধরনের একটি রাজস্ব লাভ করবে। পাশাপাশি এই পরিবহন চালকেরাও বহুমুখী হয়রানি থেকে কিছুটা নিস্তার পাবেন।

যদিও অটোরিকশার লাইসেন্স পেতে বা অনুমোদন লাভে সিটি কর্পোরেশন কত টাকা ফি নির্ধারন করেছে সে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়নি।

উল্লেখ্য আওয়ামী লীগ নেতা শওকত হোসেন হিরন মেয়র থাকাকালীন ২হাজার ৫৯০টি অটোরিকশার লাইসেন্স দিয়েছিলেন। এর পরে আর নতুন করে এই পরিহনের লাইসেন্স দেওয়া না হলেও নগরীতে অটোরিকশার সংখ্যা দিনে দিনে বাড়তে থাকে।

এমনকি ব্যক্তি-বিশেষ স্থানীয়ভাবে অটোরিকশা তৈরি করে সড়কে নামিয়ে দেয়। ফলে এর সংখ্যা এতটাই বৃদ্ধি পায় এবং নগরীর সড়কে এলোমেলো চলাচল ও যত্রতত্র যাত্রী ওঠা নামার কারণে যানজট প্রকট আকার ধারণ করে।

সিটি কর্পোরেশনের আরও এক কর্মকর্তা নামপ্রকাশ না করার শর্তে জানান, মেয়র নগরীর সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে এবং মালিক-শ্রমিকদের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে অটোরিকশাকে নতুন করে লাইসেন্স দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

এ পরিবহনের মালিক-শ্রমিকেরা বঙ্গবন্ধু উদ্যানে সমাবেশ করে মেয়রের কাছে বৈধতা চেয়ে আর্জি জানিয়েছিলেন। কিন্তু সকল প্রক্রিয়া শেষ করতে কিছুটা বিলম্ব হওয়ার পর মালিকদের লাইসেন্স প্রাপ্তির আবেদন ফরম সংগ্রহ করার সময়-সুযোগ করে দিয়েছে।’

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

আজকের সূর্যোদয়

আজকের সূর্যোদয় প্রত্রিকায় আপনাদের স্বাগতম। ‍আমাদের নিউজ পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিয়ে আমাদের পাশে থাকুন।

বরিশালে মুজিবিয়ানের ৮৭ নেতাকে খুঁজছে গোয়েন্দা সংস্থা

ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার লাইসেন্স দেবে বরিশাল সিটি কর্পোরেশন

আপডেট সময় ০১:৩৭:৩০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৩

বরিশাল নগরীতে চলাচলরত অবৈধ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাকে (হলুদ) বৈধতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিটি কর্পোরেশন। বুধবার সিটি কর্পোরেশনের পক্ষে নগরীতে মাইকিং করে এই তথ্য জানানো হয়েছে। এই পরিবহনের বৈধতা অর্থাৎ লাইসেন্স পাওয়ার প্রাথমিক ধাপ হিসেবে সিটি কর্পোরেশনের এনেক্স ভবন থেকে আবেদনপত্র সংগ্রহ করতে বলা হয়। জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি ও পাসপোর্ট সাইজের এক কপি ছবি জমা দিয়ে ১৯ জানুয়ারি সকাল ৯ টা থেকে বিনামূল্যে এই ফরম নেওয়া যাবে।

সিটি কর্পোরেশনের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরে বরিশাল নগরীতে ১০ হাজারের বেশি অবৈধ অটোরিকশায় যাত্রী পরিবহন করছে। সম্প্রতি এর সংখ্যা আরও বেড়েছে ও যত্রতত্র স্থানে পার্কিং করা এবং যাত্রী ওঠানো নামানোর কারণে প্রায়শই নগরীতে যানজট তৈরি হচ্ছে। এতে নগরবাসী ভোগান্তিতে পড়তে হয়, হচ্ছে। এছাড়া হলুদ অটোরিকশা মালিক-শ্রমিকেরাও দীর্ঘদিন যাবৎ এই পরিবহনের বৈধতা অর্থাৎ লাইসেন্স দাবি করে নানান কর্মসূচি পালন করেছে।

সর্বশেষ নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যানে সমাবেশ করে সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহকে প্রধান অতিথি করে সেখানে মালিক-শ্রমিকেরা লাইসেন্সের দাবি রাখেন। অবশ্য ওই সময় মেয়র তাদের বৈধতা দেওয়ারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।

এরপর দীর্ঘ প্রক্রিয়া শেষে আজ বুধবার শহরে সিটি কর্পোরেশনের পক্ষে মাইকিং করে অটোরিকশা মালিকদের লাইসেন্স প্রাপ্তির আবেদন ফরম সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে।

নামপ্রকাশ না করার শর্তে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, অটোরিকশার বৈধতা নিয়ে সম্প্রতি সিটি মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ কর্মকর্তাদের নিয়ে একটি বৈঠক করেছেন। সেখানে সর্বসম্মতিক্রমে এই পরিবহনকে একটি শৃঙ্খলার মধ্যে নিয়ে আসতে লাইসেন্স দেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এবং বুধবার এই সংক্রান্তে একটি ঘোষণা বিজ্ঞপ্তিও জারি করেছে সিটি কর্পোরেশন। যদিও এই বিষয়ে মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ’র বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

একাধিক মালিক-শ্রমিক জানান, বিগত সময়ে লাইসেন্সবিহীন চলাচলের কারণে তাদের নানান হয়রানির সম্মুখিন হতে হয়েছে। কখনও ট্রাফিক পুলিশের হয়রানি, আবার কখন কথিত শ্রমিক সংগঠনের চাঁদাবাজিও মুখ বুঝে সহ্য করতে হয়েছে। কিন্তু অনুমোদন না থাকায় কোথাও প্রতিবাদ করার সুযোগ হয়নি। এমনকি বৈধতার দাবিতে আন্দোলন-সংগ্রাম করেও লাভ হয়নি।

শ্রমিক সংগঠনের নেতা লেদু সিকদারসহ বেশ কয়েকজন চালক জানান, শ্রমিক সমাবেশে সিটি মেয়র যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তা কিছুটা বিলম্বে হলেও রক্ষা করেছেন। এতে মালিক-শ্রমিকেরা খুশি হয়েছেন এবং মেয়রকে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য সাধুবাদও জানিয়েছেন।

পর্যবেক্ষক মহল বলছে- অবৈধ অটোরিকশাকে বৈধতা দিলে নগরীর সড়কে শৃঙ্খলা ফেরার পাশাপাশি সিটি কর্পোরেশনও বড় ধরনের একটি রাজস্ব লাভ করবে। পাশাপাশি এই পরিবহন চালকেরাও বহুমুখী হয়রানি থেকে কিছুটা নিস্তার পাবেন।

যদিও অটোরিকশার লাইসেন্স পেতে বা অনুমোদন লাভে সিটি কর্পোরেশন কত টাকা ফি নির্ধারন করেছে সে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়নি।

উল্লেখ্য আওয়ামী লীগ নেতা শওকত হোসেন হিরন মেয়র থাকাকালীন ২হাজার ৫৯০টি অটোরিকশার লাইসেন্স দিয়েছিলেন। এর পরে আর নতুন করে এই পরিহনের লাইসেন্স দেওয়া না হলেও নগরীতে অটোরিকশার সংখ্যা দিনে দিনে বাড়তে থাকে।

এমনকি ব্যক্তি-বিশেষ স্থানীয়ভাবে অটোরিকশা তৈরি করে সড়কে নামিয়ে দেয়। ফলে এর সংখ্যা এতটাই বৃদ্ধি পায় এবং নগরীর সড়কে এলোমেলো চলাচল ও যত্রতত্র যাত্রী ওঠা নামার কারণে যানজট প্রকট আকার ধারণ করে।

সিটি কর্পোরেশনের আরও এক কর্মকর্তা নামপ্রকাশ না করার শর্তে জানান, মেয়র নগরীর সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে এবং মালিক-শ্রমিকদের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে অটোরিকশাকে নতুন করে লাইসেন্স দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

এ পরিবহনের মালিক-শ্রমিকেরা বঙ্গবন্ধু উদ্যানে সমাবেশ করে মেয়রের কাছে বৈধতা চেয়ে আর্জি জানিয়েছিলেন। কিন্তু সকল প্রক্রিয়া শেষ করতে কিছুটা বিলম্ব হওয়ার পর মালিকদের লাইসেন্স প্রাপ্তির আবেদন ফরম সংগ্রহ করার সময়-সুযোগ করে দিয়েছে।’