ফরিদপুরে প্রধানমন্ত্রীর চীফ প্রটোকল অফিসার পরিচয়ে প্রতারণার ঘটনায় দ্রুত বিচার আইনে দায়ের করা মামলায় দুই আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ফরিদপুরের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে আউট সোর্সিংয়ের জনবল নিয়োগের টেন্ডারে প্রভাব খাটানোর অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে এ মামলা দায়ের করা হয়।
বৃহস্পতিবার দুপুরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে ফরিদপুরের পুলিশ সুপার এ তথ্য জানান। ফরিদপুরের পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এ ব্রিফিং করা হয়। গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন জেলায় মামলা রয়েছে এবং সারাদেশে এমন ভুয়া নিয়োগ বাণিজ্য ও অবৈধ কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে তারা অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন বলেও পুলিশ সুপার জানান।
গ্রেফতার দুজন হলেন, ঝালকাঠি জেলার নলছটি থানার কুলকাঠি গ্রামের চিত্ত রঞ্জন মিত্রের ছেলে চন্দ্র শেখর মিত্র (৫৪) এবং বাগেরহাট জেলার মোরেলগঞ্জ থানার কুমারিয়াজোলার মোদাচ্ছের আলী শেখের ছেলে মোঃ লিয়াকত আলী শেখ (৫১)। তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার মো: শাহজাহান সাংবাদিকদের জানান, গত ৪ জানুয়ারি ফরিদপুরের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে আউটসোর্সিং পদ্ধতিতে ড্রাইভার, পরিছন্নতা কর্মী, নৈশ প্রহরী নিয়োগের টেন্ডার হয়। এরপর চন্দ্র শেখর মিত্র নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর চীপ প্রটোকল অফিসার পরিচয় দিয়ে প্রথমে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মোস্তফা ফারুকের মোবাইল নম্বরে ফোন করে। এ সময় তিনি ওই টেন্ডারে অংশগ্রহণকারী ট্রাস্ট সিকিউরিটি সার্ভিসেস লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠানকে আউটসোর্সিংয়ের ওই কাজ পাইয়ে দিতে নির্দেশ দেন। বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ হলে কোতোয়ালি থানায় ১৫ জানুয়ারি একটি এফআইআর করা হয়।
এদিকে, গত মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) চন্দ্র শেখর আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে এসে এ ব্যাপারে চাপ খাটানোর চেষ্টাকালে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। পরে ওইদিন রাতে লিয়াকত আলীকে খুলনার লবনচরার মোহাম্মদনগর থেকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ সুপার জানান, এই প্রতারক চক্র নিজেদের প্রধানমন্ত্রীর চীফ প্রটোকল অফিসার পরিচয়ে সরকারি কর্মকর্তাদের ফোন করে টেন্ডার বাণিজ্য করে। সর্বশেষ ভাঙ্গার পদ্মাসেতু রেললাইন নির্মাণ কাজে পাথর সাপ্লাই কাজ পাইয়ে দেয়ার কথা বলে বিদেশী নাগরিকদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেন। তাদের ব্যাংক হিসাব পর্যবেক্ষণ করে ধারণা করা হচ্ছে, সারাদেশেই তারা অবৈধ কাজের মাধ্যমে অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার এসআই সুজন বিশ্বাস জানান, গ্রেফতার চন্দ্রশেখরের বিরুদ্ধে ডিএমপি থানায় মামলা দায়ের করা হয় ২০১৬ সালের ১ ডিসেম্বর। আর লিয়াকত আলীর বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন আদালতে ও জয়পুরহাটে দুটি মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে।