ঢাকা , সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

টানা বৃষ্টিতে আমন ক্ষেতে ফিরেছে প্রাণ

  • সূর্যোদয় ডেস্ক:
  • আপডেট সময় ০১:২৪:১৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • ১১৬৩ বার পড়া হয়েছে

ঠাকুরগাঁওয়ে আমন মৌসুমের শুরুতে বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় বিপাকে ছিলেন কৃষকেরা। অনেকে সেচ দিয়ে আমন ধান রোপণ করেছেন। পরে ওই খেতে আরো সেচ দিতে হয়েছে। এতে তাদের বাড়তি খরচ হয়েছে। তবে গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে আমনের খেতে প্রাণ ফিরেছে। কৃষকও স্বস্তি পেয়েছেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর ঠাকুরগাঁও কার্যালয় জেলার তাপমাত্রার পাশাপাশি বৃষ্টিপাতের পরিমাণও রেকর্ড করে থাকে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্র জানায়, গত বুধবার থেকে গতকাল শনিবার পর্যন্ত ৬৩২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। গড় বৃষ্টিপাত হয়েছে ১২৬ দশমিক ৪ মিলিমিটার। সদর উপজেলায় সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। এখানে ১৪৮ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। আর কম বৃষ্টিপাত হয়েছে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায়। সেখানে বৃষ্টিপাত হয়েছে ১১১ মিলিমিটার।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়া, রাজাগাঁও ও আকচা এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, পথের ধারে সবুজ আমন ক্ষেত। কৃষক কোথাও কোথাও খেতের আগাছা নিড়ানিতে ব্যস্ত। আবার কোথাও কোদাল দিয়ে খেতের আইল (সীমানা) বেঁধে দিচ্ছেন। তাদের চোখে-মুখে খুশির ঝিলিক।

সদর উপজেলার মহেষপুর গ্রামের কৃষক আনোয়ার হোসেন সাত বিঘা জমিতে আমন ধান চাষ করছেন। গত কয়েক দিনের বৃষ্টি তার মনে স্বস্তি এনে দিয়েছে। তিনি বলেন, বৃষ্টি না থাকায় প্রথমে ডিজেলচালিত শ্যালো মেশিনে সেচ দিয়ে আমনের চারা রোপণ করতে হয়েছে। এতে বাড়তি খরচ করতে হয়েছে। কয়েক দিন বৃষ্টি না হওয়ায় ক্ষেতের মাটি ফেটে গিয়েছিল। খেতের ধানগাছ লালচে হয়ে যাচ্ছিল। ভালো ফলনের আশা ছেড়েই দিয়েছিলাম। গত বুধবার থেকে বৃষ্টি হচ্ছে। ধানের ক্ষেত প্রাণ ফিরে পেয়েছে। আগের তুলনায় আমনের বেশি ফলনের আশা করছি।

সদর উপজেলার খড়িবাড়ী গ্রামের কৃষক আবদুল জব্বার জানান, চলতি মৌসুমে তিনি পাঁচ বিঘা জমিতে আমন ধান চাষ করেছেন। বৃষ্টিপাত দেরিতে হওয়ায় কিছুটা সমস্যা হয়েছে। আর কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে ফলনও বেশ ভালো হবে।

এবার আষাঢ় ও শ্রাবণ মাসে পর্যাপ্ত বৃষ্টি হয়নি। আমনের আশানুরূপ ফলনের আশা ছেড়েই দিয়েছিলেন বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ধনতলা এলাকার কৃষক প্রদীপ রায়। টানা বৃষ্টিতে ভালো ফলনের আশা করছেন তিনি।

তিনি বলেন, গত বছর ১২ বিঘা জমিতে ধান আবাদ করে ১৩৮ মণ ধান পেয়েছিলাম। এ বছর ১৪৪-১৫০ মণ ধান পাওয়ার আশা করছি।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর ঠাকুরগাঁও কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জেলায় ১ লাখ ৩৭ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ৭৬ হাজার ৩৩০ টন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর ঠাকুরগাঁও কার্যালয়ের উপপরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমন চাষ পুরোপুরি বৃষ্টির ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু এবার তেমন বৃষ্টির দেখা মেলেনি। কৃষকদের শ্যালো যন্ত্র দিয়ে জমিতে সেচ দিতে হয়েছে। এতে তাদের বাড়তি খরচ করতে হয়েছে। স্বাভাবিক বৃষ্টি না হওয়ায় ধানের ফলন নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন। কিন্তু কয়েক দিনের বৃষ্টিতে কৃষকদের সেই দুশ্চিন্তা কেটে গেছে।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

আজকের সূর্যোদয়

আজকের সূর্যোদয় প্রত্রিকায় আপনাদের স্বাগতম। ‍আমাদের নিউজ পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিয়ে আমাদের পাশে থাকুন।

বরিশালে মুজিবিয়ানের ৮৭ নেতাকে খুঁজছে গোয়েন্দা সংস্থা

টানা বৃষ্টিতে আমন ক্ষেতে ফিরেছে প্রাণ

আপডেট সময় ০১:২৪:১৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩

ঠাকুরগাঁওয়ে আমন মৌসুমের শুরুতে বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় বিপাকে ছিলেন কৃষকেরা। অনেকে সেচ দিয়ে আমন ধান রোপণ করেছেন। পরে ওই খেতে আরো সেচ দিতে হয়েছে। এতে তাদের বাড়তি খরচ হয়েছে। তবে গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে আমনের খেতে প্রাণ ফিরেছে। কৃষকও স্বস্তি পেয়েছেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর ঠাকুরগাঁও কার্যালয় জেলার তাপমাত্রার পাশাপাশি বৃষ্টিপাতের পরিমাণও রেকর্ড করে থাকে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্র জানায়, গত বুধবার থেকে গতকাল শনিবার পর্যন্ত ৬৩২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। গড় বৃষ্টিপাত হয়েছে ১২৬ দশমিক ৪ মিলিমিটার। সদর উপজেলায় সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। এখানে ১৪৮ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। আর কম বৃষ্টিপাত হয়েছে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায়। সেখানে বৃষ্টিপাত হয়েছে ১১১ মিলিমিটার।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়া, রাজাগাঁও ও আকচা এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, পথের ধারে সবুজ আমন ক্ষেত। কৃষক কোথাও কোথাও খেতের আগাছা নিড়ানিতে ব্যস্ত। আবার কোথাও কোদাল দিয়ে খেতের আইল (সীমানা) বেঁধে দিচ্ছেন। তাদের চোখে-মুখে খুশির ঝিলিক।

সদর উপজেলার মহেষপুর গ্রামের কৃষক আনোয়ার হোসেন সাত বিঘা জমিতে আমন ধান চাষ করছেন। গত কয়েক দিনের বৃষ্টি তার মনে স্বস্তি এনে দিয়েছে। তিনি বলেন, বৃষ্টি না থাকায় প্রথমে ডিজেলচালিত শ্যালো মেশিনে সেচ দিয়ে আমনের চারা রোপণ করতে হয়েছে। এতে বাড়তি খরচ করতে হয়েছে। কয়েক দিন বৃষ্টি না হওয়ায় ক্ষেতের মাটি ফেটে গিয়েছিল। খেতের ধানগাছ লালচে হয়ে যাচ্ছিল। ভালো ফলনের আশা ছেড়েই দিয়েছিলাম। গত বুধবার থেকে বৃষ্টি হচ্ছে। ধানের ক্ষেত প্রাণ ফিরে পেয়েছে। আগের তুলনায় আমনের বেশি ফলনের আশা করছি।

সদর উপজেলার খড়িবাড়ী গ্রামের কৃষক আবদুল জব্বার জানান, চলতি মৌসুমে তিনি পাঁচ বিঘা জমিতে আমন ধান চাষ করেছেন। বৃষ্টিপাত দেরিতে হওয়ায় কিছুটা সমস্যা হয়েছে। আর কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে ফলনও বেশ ভালো হবে।

এবার আষাঢ় ও শ্রাবণ মাসে পর্যাপ্ত বৃষ্টি হয়নি। আমনের আশানুরূপ ফলনের আশা ছেড়েই দিয়েছিলেন বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ধনতলা এলাকার কৃষক প্রদীপ রায়। টানা বৃষ্টিতে ভালো ফলনের আশা করছেন তিনি।

তিনি বলেন, গত বছর ১২ বিঘা জমিতে ধান আবাদ করে ১৩৮ মণ ধান পেয়েছিলাম। এ বছর ১৪৪-১৫০ মণ ধান পাওয়ার আশা করছি।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর ঠাকুরগাঁও কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জেলায় ১ লাখ ৩৭ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ৭৬ হাজার ৩৩০ টন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর ঠাকুরগাঁও কার্যালয়ের উপপরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমন চাষ পুরোপুরি বৃষ্টির ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু এবার তেমন বৃষ্টির দেখা মেলেনি। কৃষকদের শ্যালো যন্ত্র দিয়ে জমিতে সেচ দিতে হয়েছে। এতে তাদের বাড়তি খরচ করতে হয়েছে। স্বাভাবিক বৃষ্টি না হওয়ায় ধানের ফলন নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন। কিন্তু কয়েক দিনের বৃষ্টিতে কৃষকদের সেই দুশ্চিন্তা কেটে গেছে।