দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ সালাত ও বিভিন্ন নফল সালাত আদায়ের জন্য আমরা অজু করে থাকি। কারণ সালাতের পূর্বশর্ত হলো তাহারাত বা পবিত্রতা। আর পবিত্রতা হাসিলের মাধ্যম হচ্ছে অজু। যেমন হাদিসে শরিফে হজরত ইবনু উমার রা: থেকে বর্ণিত- রাসূলুল্লাহ সা: বলেন, ‘পবিত্রতা ছাড়া সালাত কবুল হয় না। আর হারাম উপায়ে প্রাপ্ত মালের সাদকাও কবুল হয় না।’ (তিরমিজি-১, ইবনে মাজাহ-২৭২)
ভালোভাবে পবিত্রতা অর্জনকারীদের প্রশংসা : কুবা এলাকার অধিবাসীরা প্রাকৃতিক প্রয়োজন সেরে ভালোভাবে পবিত্রতা অর্জন করতেন এবং সবসময় পাক-সাফ থাকতেন। তাদের প্রশংসা করে আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘তাতে এমন সব লোক রয়েছে যারা উত্তমরূপে পবিত্র হওয়াকে ভালোবাসে। আর যারা উত্তমরূপে পবিত্রতা অর্জন করে আল্লাহ তাদের ভালোবাসেন।’ (সূরা তাওবাহ-১০৮)
অন্যত্র আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাওবাহকারীদের পছন্দ করেন এবং পছন্দ করেন উত্তমরূপে পবিত্রতা অর্জনকারীদের।’ (সূরা বাকারাহ-২২২)
অজুর মাধ্যমে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের উজ্জ্বলতা : অজুর মাধ্যমে চেহারা ও অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়। যে যত বেশি অজু করবে কিয়ামত দিবসে তার চেহারার ঔজ্জ্বল্য ততই বৃদ্ধি পাবে। অজুর অঙ্গগুলো চমকাতে থাকবে এবং সেই উজ্জ্বলতা দেখেই নবীজী সা: তাঁর উম্মতকে চিনতে পারবেন। এক হাদিসে হজরত নুআইম আল মুজমির রহ: থেকে বর্ণিত- তিনি বলেন, আমি আবু হুরায়রা রা:-এর সাথে মসজিদের ছাদে উঠলাম। অতঃপর তিনি অজু করে বললেন, ‘আমি আল্লাহর রাসূল সা:-কে বলতে শুনেছি, ‘কিয়ামতের দিন আমার উম্মাতকে এমন অবস্থায় আহ্বান করা হবে যে, অজুর প্রভাবে তাদের হাত-পা ও মুখমণ্ডল উজ্জ্বল থাকবে। তাই তোমাদের মধ্যে যে এ উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে নিতে পারে, সে যেন তা করে।’ (বুখারি-১৩৬)
অজুর মাধ্যমে গুনাহ ঝরে যায় : হজরত আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিত- তিনি বলেন, রাসূলল্লাহ সা: বলেছেন, ‘যখন কোনো মু’মিন অথবা মুসলিম বান্দা অজু করে এবং মুখমণ্ডল ধোয়, তার মুখমণ্ডল হতে তার চোখের দ্বারা কৃত সব গুনাহ পানির সাথে অথবা পানির শেষ বিন্দুর সাথে দূর হয়ে যায়। যখন সে তার দু’হাত ধোয়, তার দু’হাতে কৃত সব গুনাহ তার হাত থেকে পানির সাথে অথবা পানির অবশিষ্ট বিন্দুর সাথে দূরীভূত হয়ে যায়। অতঃপর সে সব গুনাহ থেকে পবিত্র হয়ে যায়।’ (সুনানে তিরমিজি-২)
আল্লাহ তায়ালা আমাদের সর্বাবস্থায় পবিত্রতার হালতে থাকার এবং তার প্রিয় বান্দাদের কাতারে শামিল হওয়ার তাওফিক দান করুন।
লেখক :
- আবরার নাঈম
শিক্ষার্থী, জামিয়া আরাবিয়া মাখযানুল উলুম, ময়মনসিংহ, সদর।