ঢাকা , সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

শাপলা চত্বরেই মহাসমাবেশ করবে জামায়াত

  • সূর্যোদয় ডেস্ক:
  • আপডেট সময় ১১:৩৯:৪৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৩
  • ১২১০ বার পড়া হয়েছে

রাজধানীর শাপলা চত্বরে জামায়াতে ইসলামীর মহাসমাবেশ আজ। বেলা ২টায় এ সমাবেশ শুরু হবে। বিএনপি ও আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতের এ সমাবেশ ঘিরে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। বিএনপি ও আওয়ামী লীগকে সমাবেশের অনুমতি দিলেও জামায়াতকে সমাবেশের অনুমতি দেয়া হবে না বলে জানিয়েছে পুলিশ। তারপরও সমাবেশ বাস্তবায়নে সার্বিক প্রস্তুতি নিয়েছে জামায়াত। দুপুর ১২টার পর থেকেই জামায়াতের নেতাকর্মীরা শাপলা চত্বরে আসা শুরু করবে বলে দলটির নেতারা জানিয়েছেন। এরপর মঞ্চ তৈরি শেষে নির্ধারিত সময়ে শুরু হবে মহাসমাবেশ। শাপলা চত্বর থেকে একদিকে ফকিরাপুল, অন্যদিকে দৈনিক বাংলা ও দক্ষিণে টিকাটুলী পর্যন্ত সমাবেশ ছড়িয়ে পড়বে বলে দলটির নেতাকর্মীরা আশা করছেন।

এদিকে মহাসমাবেশ ঘিরে ১৮ অক্টোবরের পর থেকে গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত নতুন করে তিন শ’ মামলায় জামায়াতের প্রায় পাঁচ শ’ নেতাকর্মীকে আটক করা ছাড়াও ১২ জনকে গুম এবং পুলিশের হামলায় ৪৫ জন আহত হয়েছে বলে দলটির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে।

সমাবেশ সফলের আহবান ভারপ্রাপ্ত আমিরের : আজ ২৮ অক্টোবর শনিবার রাজধানী ঢাকা মহানগরীর শাপলা চত্বরে ইতোমধ্যেই মহাসমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। ঘোষিত কর্মসূচি সর্বাত্মকভাবে সফল করার জন্য দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমির ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান গতকাল এক বিবৃতি প্রদান করেছেন। বিবৃতিতে তিনি বলেন, আজকের মহাসমাবেশ সর্বাত্মকভাবে সফল করতে হবে এবং কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন দিতে সরকারকে বাধ্য করতে হবে। অনির্বাচিত অবৈধ সরকার জগদ্দল পাথরের মতো জাতির ঘাড়ে চেপে বসেছে। এই সরকারের পতন ঘটানো ছাড়া জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করা যাবে না। জামায়াতের মহাসমাবেশ বানচাল করার জন্য কোনো কোনো মহলের পক্ষ থেকে নানাভাবে গুজব ও মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হচ্ছে। আমি দেশবাসীকে সরকারি-বেসরকারি মহলের কোনো প্রকার গুজবে কান না দেয়ার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। কোনো মানুষকে ভয় না করে শুধুমাত্র আল্লাহকে ভয় করে দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে জামায়াত ঘোষিত মহাসমাবেশে দলে দলে যোগদান করে সর্বাত্মকভাবে সফল করে তোলার জন্য আমি সংগঠনের সব জনশক্তি এবং দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।

নেতাকর্মী গ্রেফতারের প্রতিবাদ : মহাসমাবেশ বানচাল করার হীনউদ্দেশ্যে সরকার সারা দেশে তল্লাশির নামে হয়রানি ও গ্রেফতার অভিযান চালিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় শতাধিক নেতাকর্মীকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে দলটির ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এ টি এম মা’ছুম গতকাল এক বিবৃতিতে বলেন, মহাসমাবেশ বানচাল করার অসৎ উদ্দেশ্যে সরকার নেতাকর্মীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে। দেশের বেশ কিছু এলাকায় টহলের নামে পিকআপ ভ্যানে চড়ে বাঁশি বাজিয়ে পুলিশ ত্রাস সৃষ্টি করেছে। দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা নেতাকর্মীদের বাড়িঘর, ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ও কর্মস্থলে হামলা চালানো হচ্ছে। বাড়ি-ঘরের মূল্যবান জিনিসপত্র ভাঙচুর করে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করা হচ্ছে। অভিযানকালে তারা বাসাবাড়িতে থাকা লোকজনকে অশ্রাব্য ভাষায় গালি দিচ্ছে এবং ভয় দেখাচ্ছে। পুলিশের এই তাণ্ডবতা থেকে নারী-শিশু এবং বৃদ্ধ বাবা-মাও রেহাই পাচ্ছেন না। গ্রেফতার আতঙ্কে মানুষ ছোটাছুটি করছে। মনে হয়, দেশে যুদ্ধাবস্থা তৈরি হয়েছে। বিবৃতিতে তিনি আরো বলেন, গত ২৩ অক্টোবর মহাসমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণার পর থেকে এ পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের কয়েক শ’ নেতাকর্মীকে পুলিশ অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করেছে। নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি ডা: ফজলুর রহমানকে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা বাড়ি ফেরার পথে ২৬ অক্টোবর রাত ৯.৩০ টার দিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করেছে। ২৬ অক্টোবর নরসিংদী জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক মকবুল হোসেনের বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর করা হয় এবং মনোহরদীর খিদিরপুর ইউনিয়ন সভাপতি ডা: ইকবাল হোসেনের বাড়িতে আওয়ামী লীগের ৪০-৫০ জন ক্যাডার দা-ছুরি নিয়ে রাত ১১টার সময়ে আক্রমণ করে এবং পুলিশের সামনে তাকে কুপিয়ে আহত করে। এসময় তার হোন্ডাসহ বাড়ির আসবাবপত্রের ব্যাপক ক্ষতিসাধন করা হয়।

তিনি বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের জুলুম-নির্যাতনের মাত্রা ছাড়িয়ে গিয়েছে। তারা দেশকে এক ভয়াবহ অবস্থার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। সরকার জামায়াতসহ বিরোধী দলের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে গোটা দেশকে আজ এক বৃহৎ কারাগারে পরিণত করেছে। আমি স্বৈরাচারী জালিম সরকারের এসব জুলুম-নির্যাতন, দমন-পীড়ন ও গ্রেফতার-হয়রানির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সভা : জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির মো: নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেছেন, শাপলা চত্বরে বেলা ২টায় জামায়াতে ইসলামী ঘোষিত শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে ইনশাআল্লাহ। ইতোমধ্যে আমরা মহাসমাবেশ বাস্তবায়নে সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। জনগণের ভোটের অধিকার, ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠায় শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশে রাজধানীর সব শ্রেণী পেশা, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে নগরবাসীকে দলে দলে যোগদানের জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা আশা করছি, জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে এটি একটি ঐতিহাসিক মহাসমাবেশে পরিণত হবে ইনশাআল্লাহ। মহাসমাবেশ সফল করতে আমরা যেকোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত আছি। এজন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করে রাজপথের আন্দোলনে সাহসিকতার সাথে অংশগ্রহণ করে শাপলা চত্বরে দলে দলে যোগ দিয়ে জামায়াতের মহাসমাবেশ সফল করতে সবার প্রতি তিনি উদাত্ত আহ্বান জানান।

গতকাল ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে রাজধানীর শাপলা চত্বরে মহাসমাবেশ সফল করতে আয়োজিত মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ বৈঠকে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির আবদুস সবুর ফকির ও অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি যথাক্রমে দেলাওয়ার হোসেন ও ড. আব্দুল মান্নান।

ঢাকা মহানগরী উত্তরের সমন্বয় সভা : শাপলা চত্বরের মহাসমাবেশ সফল করার লক্ষ্যে ঢাকা মহানগরী উত্তরের উদ্যোগে বাস্তবায়ন কমিটির এক সমন্বয় সভা গতকাল রাজধানীর একটি মিলনায়তনে কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের ভারপ্রাপ্ত আমির আব্দুর রহমান মূসার সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিমের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমির ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান, নাজিম উদ্দীন মোল্লা ও ডা: ফখরুদ্দীন মানিক প্রমুখ।

সভায় মহাসমাবেশ বাস্তবায়নে থানা ও ওয়ার্ডের নেয়া বিভিন্ন পরিকল্পনার বাস্তবায়নের দিক নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়। অযুত জনতার উপস্থিতিতে সুশৃঙ্খলভাবে সমাবেশ বাস্তবায়নে সবাইকে ভূমিকা রাখার আহবান জানানো হয়।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

আজকের সূর্যোদয়

আজকের সূর্যোদয় প্রত্রিকায় আপনাদের স্বাগতম। ‍আমাদের নিউজ পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিয়ে আমাদের পাশে থাকুন।

বরিশালে মুজিবিয়ানের ৮৭ নেতাকে খুঁজছে গোয়েন্দা সংস্থা

শাপলা চত্বরেই মহাসমাবেশ করবে জামায়াত

আপডেট সময় ১১:৩৯:৪৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৩

রাজধানীর শাপলা চত্বরে জামায়াতে ইসলামীর মহাসমাবেশ আজ। বেলা ২টায় এ সমাবেশ শুরু হবে। বিএনপি ও আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতের এ সমাবেশ ঘিরে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। বিএনপি ও আওয়ামী লীগকে সমাবেশের অনুমতি দিলেও জামায়াতকে সমাবেশের অনুমতি দেয়া হবে না বলে জানিয়েছে পুলিশ। তারপরও সমাবেশ বাস্তবায়নে সার্বিক প্রস্তুতি নিয়েছে জামায়াত। দুপুর ১২টার পর থেকেই জামায়াতের নেতাকর্মীরা শাপলা চত্বরে আসা শুরু করবে বলে দলটির নেতারা জানিয়েছেন। এরপর মঞ্চ তৈরি শেষে নির্ধারিত সময়ে শুরু হবে মহাসমাবেশ। শাপলা চত্বর থেকে একদিকে ফকিরাপুল, অন্যদিকে দৈনিক বাংলা ও দক্ষিণে টিকাটুলী পর্যন্ত সমাবেশ ছড়িয়ে পড়বে বলে দলটির নেতাকর্মীরা আশা করছেন।

এদিকে মহাসমাবেশ ঘিরে ১৮ অক্টোবরের পর থেকে গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত নতুন করে তিন শ’ মামলায় জামায়াতের প্রায় পাঁচ শ’ নেতাকর্মীকে আটক করা ছাড়াও ১২ জনকে গুম এবং পুলিশের হামলায় ৪৫ জন আহত হয়েছে বলে দলটির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে।

সমাবেশ সফলের আহবান ভারপ্রাপ্ত আমিরের : আজ ২৮ অক্টোবর শনিবার রাজধানী ঢাকা মহানগরীর শাপলা চত্বরে ইতোমধ্যেই মহাসমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। ঘোষিত কর্মসূচি সর্বাত্মকভাবে সফল করার জন্য দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমির ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান গতকাল এক বিবৃতি প্রদান করেছেন। বিবৃতিতে তিনি বলেন, আজকের মহাসমাবেশ সর্বাত্মকভাবে সফল করতে হবে এবং কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন দিতে সরকারকে বাধ্য করতে হবে। অনির্বাচিত অবৈধ সরকার জগদ্দল পাথরের মতো জাতির ঘাড়ে চেপে বসেছে। এই সরকারের পতন ঘটানো ছাড়া জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করা যাবে না। জামায়াতের মহাসমাবেশ বানচাল করার জন্য কোনো কোনো মহলের পক্ষ থেকে নানাভাবে গুজব ও মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হচ্ছে। আমি দেশবাসীকে সরকারি-বেসরকারি মহলের কোনো প্রকার গুজবে কান না দেয়ার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। কোনো মানুষকে ভয় না করে শুধুমাত্র আল্লাহকে ভয় করে দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে জামায়াত ঘোষিত মহাসমাবেশে দলে দলে যোগদান করে সর্বাত্মকভাবে সফল করে তোলার জন্য আমি সংগঠনের সব জনশক্তি এবং দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।

নেতাকর্মী গ্রেফতারের প্রতিবাদ : মহাসমাবেশ বানচাল করার হীনউদ্দেশ্যে সরকার সারা দেশে তল্লাশির নামে হয়রানি ও গ্রেফতার অভিযান চালিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় শতাধিক নেতাকর্মীকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে দলটির ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এ টি এম মা’ছুম গতকাল এক বিবৃতিতে বলেন, মহাসমাবেশ বানচাল করার অসৎ উদ্দেশ্যে সরকার নেতাকর্মীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে। দেশের বেশ কিছু এলাকায় টহলের নামে পিকআপ ভ্যানে চড়ে বাঁশি বাজিয়ে পুলিশ ত্রাস সৃষ্টি করেছে। দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা নেতাকর্মীদের বাড়িঘর, ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ও কর্মস্থলে হামলা চালানো হচ্ছে। বাড়ি-ঘরের মূল্যবান জিনিসপত্র ভাঙচুর করে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করা হচ্ছে। অভিযানকালে তারা বাসাবাড়িতে থাকা লোকজনকে অশ্রাব্য ভাষায় গালি দিচ্ছে এবং ভয় দেখাচ্ছে। পুলিশের এই তাণ্ডবতা থেকে নারী-শিশু এবং বৃদ্ধ বাবা-মাও রেহাই পাচ্ছেন না। গ্রেফতার আতঙ্কে মানুষ ছোটাছুটি করছে। মনে হয়, দেশে যুদ্ধাবস্থা তৈরি হয়েছে। বিবৃতিতে তিনি আরো বলেন, গত ২৩ অক্টোবর মহাসমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণার পর থেকে এ পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের কয়েক শ’ নেতাকর্মীকে পুলিশ অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করেছে। নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি ডা: ফজলুর রহমানকে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা বাড়ি ফেরার পথে ২৬ অক্টোবর রাত ৯.৩০ টার দিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করেছে। ২৬ অক্টোবর নরসিংদী জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক মকবুল হোসেনের বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর করা হয় এবং মনোহরদীর খিদিরপুর ইউনিয়ন সভাপতি ডা: ইকবাল হোসেনের বাড়িতে আওয়ামী লীগের ৪০-৫০ জন ক্যাডার দা-ছুরি নিয়ে রাত ১১টার সময়ে আক্রমণ করে এবং পুলিশের সামনে তাকে কুপিয়ে আহত করে। এসময় তার হোন্ডাসহ বাড়ির আসবাবপত্রের ব্যাপক ক্ষতিসাধন করা হয়।

তিনি বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের জুলুম-নির্যাতনের মাত্রা ছাড়িয়ে গিয়েছে। তারা দেশকে এক ভয়াবহ অবস্থার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। সরকার জামায়াতসহ বিরোধী দলের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে গোটা দেশকে আজ এক বৃহৎ কারাগারে পরিণত করেছে। আমি স্বৈরাচারী জালিম সরকারের এসব জুলুম-নির্যাতন, দমন-পীড়ন ও গ্রেফতার-হয়রানির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সভা : জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির মো: নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেছেন, শাপলা চত্বরে বেলা ২টায় জামায়াতে ইসলামী ঘোষিত শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে ইনশাআল্লাহ। ইতোমধ্যে আমরা মহাসমাবেশ বাস্তবায়নে সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। জনগণের ভোটের অধিকার, ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠায় শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশে রাজধানীর সব শ্রেণী পেশা, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে নগরবাসীকে দলে দলে যোগদানের জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা আশা করছি, জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে এটি একটি ঐতিহাসিক মহাসমাবেশে পরিণত হবে ইনশাআল্লাহ। মহাসমাবেশ সফল করতে আমরা যেকোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত আছি। এজন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করে রাজপথের আন্দোলনে সাহসিকতার সাথে অংশগ্রহণ করে শাপলা চত্বরে দলে দলে যোগ দিয়ে জামায়াতের মহাসমাবেশ সফল করতে সবার প্রতি তিনি উদাত্ত আহ্বান জানান।

গতকাল ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে রাজধানীর শাপলা চত্বরে মহাসমাবেশ সফল করতে আয়োজিত মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ বৈঠকে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির আবদুস সবুর ফকির ও অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি যথাক্রমে দেলাওয়ার হোসেন ও ড. আব্দুল মান্নান।

ঢাকা মহানগরী উত্তরের সমন্বয় সভা : শাপলা চত্বরের মহাসমাবেশ সফল করার লক্ষ্যে ঢাকা মহানগরী উত্তরের উদ্যোগে বাস্তবায়ন কমিটির এক সমন্বয় সভা গতকাল রাজধানীর একটি মিলনায়তনে কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের ভারপ্রাপ্ত আমির আব্দুর রহমান মূসার সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিমের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমির ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান, নাজিম উদ্দীন মোল্লা ও ডা: ফখরুদ্দীন মানিক প্রমুখ।

সভায় মহাসমাবেশ বাস্তবায়নে থানা ও ওয়ার্ডের নেয়া বিভিন্ন পরিকল্পনার বাস্তবায়নের দিক নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়। অযুত জনতার উপস্থিতিতে সুশৃঙ্খলভাবে সমাবেশ বাস্তবায়নে সবাইকে ভূমিকা রাখার আহবান জানানো হয়।