ঢাকা , মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

ইসলামের দৃষ্টিতে মৌলিক অধিকার

  • সূর্যোদয় ডেস্ক:
  • আপডেট সময় ১১:৫২:০৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৩
  • ১১১০ বার পড়া হয়েছে

সৃষ্টিতে ও মৌলিক গুণাবলিতে সব মানুষ যেসব অধিকার ধারণ করে, তাকেই বলে মানবাধিকার বা মৌলিক অধিকার। যেমন স্বাভাবিক জন্মের অধিকার; বেঁচে থাকার বা স্বাভাবিক জীবন ধারণের অধিকার; মৌলিক প্রয়োজনীয় বস্তু ও বিষয় তথা খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষা পাওয়ার অধিকার এবং স্বাভাবিক মৃত্যুর অধিকার। এসব অধিকার মহান আল্লাহ মানুষকে দিয়েছেন। তাই সব মানুষ জন্মগতভাবেই এসব অধিকার লাভ করে থাকে।

মানবাধিকারের বিষয়টি ইসলামের দৃষ্টিতে সর্বত্র সমান। মানুষের সম্মান ও মর্যাদা রক্ষার জন্যই আল্লাহ নবী-রাসূল পাঠিয়েছেন, কিতাব নাজিল করেছেন; শরিয়তের বিধান দিয়েছেন। ইসলামী শরিয়তের বিধানেও মানবাধিকারসংক্রান্ত পঞ্চধারা প্রধান বিবেচ্যরূপে নির্ধারণ করা হয়েছে। যথা জীবন রক্ষা, সম্পদ রক্ষা, বংশ রক্ষা, জ্ঞান রক্ষা ও ধর্ম রক্ষা। মূলত মানবতার সুরক্ষা বা মানবাধিকার প্রতিষ্ঠাই ইসলামের মূল লক্ষ্য ও মুখ্য উদ্দেশ্য।

সর্বশেষ নবী রাসূল সা: মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার অনুপম দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে সফল হয়েছিলেন। তিনি প্রচার করেছেন মানুষ পৃথিবীতে আল্লাহর প্রতিনিধি ও মানুষকে সর্বোত্তম আকৃতিতে সৃষ্টি করা হয়েছে। ইসলাম বর্ণ, গোত্র, ভাষা, সম্পত্তি বা অন্য কোনো মর্যাদার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করে না। এটি একটি সমন্বিত ধারণা। ইসলামে মানবতাবিরোধী সব কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মানবতাবিরোধী অপরাধ বা মানবাধিকার লঙ্ঘনের অপরাধকে ‘কবিরা গুনাহ’ বা মহাপাপরূপে আখ্যায়িত করা হয়েছে এবং এর জন্য দুনিয়ায় চরম শাস্তি ও পরকালে কঠিন আজাবের ঘোষণা দেয়া হয়েছে।

ইসলামে মানবাধিকার বলতে সেসব অধিকারকে বোঝানো হয়, যেগুলো স্বয়ং আল্লাহ তাঁর বান্দাকে প্রদান করেছেন। পৃথিবীর কেউ তা রহিত করার অধিকার রাখে না। আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘আল্লাহ তায়ালা (সৃষ্টিতে ও গুণাবলিতে) তোমাদের একের ওপর অন্যের যে প্রাধান্য দিয়েছেন, তা দ্বারা শ্রেষ্ঠত্ব জাহির কোরো না। প্রত্যেক পুরুষ তা-ই পাবে, যা সে অর্জন করে এবং প্রত্যেক নারী তা-ই পাবে, যা সে অর্জন করে। আর তোমরা আল্লাহর কাছে তাঁর অনুগ্রহ প্রার্থনা করো, নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা সব বিষয়ে অবগত আছেন’ (সূরা নিসা-৩২)। ইসলামে ব্যক্তিগত অধিকারের মধ্যে রয়েছে জীবনের নিরাপত্তা, নারীর অধিকার, হত্যা না করা, গিবত না করা, ক্ষমা প্রদর্শন, সদাচরণ, রাজনৈতিক অধিকার, শ্রমিকের অধিকার, ব্যক্তিগত অধিকারসহ অনেক কিছু। সামাজিক অধিকারের মধ্যে রয়েছে বেঁচে থাকার অধিকার, ব্যক্তি স্বাধীনতা, মালিকানার অধিকার, সাম্যের অধিকার, চুক্তিবদ্ধ হওয়ার অধিকার, লেখা, বলা ও প্রচার কাজের অধিকার। কেউ কারো সম্পদ যেন অন্যায়ভাবে আত্মসাৎ না করে, সে জন্য বিধান দেয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রেও নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সব অপরাধীর সমান শাস্তির বিধান দেয়া হয়েছে।

একটি সুখময় শান্তিপূর্ণ পৃথিবী গড়ে তুলতে ইসলাম প্রদত্ত মানবাধিকারের নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়ন করা সচেতন ও সামর্থ্যবান সব নাগরিকের নৈতিক দায়িত্ব। সব মুসলমানের ঈমানী কর্তব্য।

লেখক : প্রাবন্ধিক ও মুদ্রণ ব্যবস্থাপক, দৈনিক সিলেটের ডাক

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

আজকের সূর্যোদয়

আজকের সূর্যোদয় প্রত্রিকায় আপনাদের স্বাগতম। ‍আমাদের নিউজ পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিয়ে আমাদের পাশে থাকুন।

বরিশালে মুজিবিয়ানের ৮৭ নেতাকে খুঁজছে গোয়েন্দা সংস্থা

ইসলামের দৃষ্টিতে মৌলিক অধিকার

আপডেট সময় ১১:৫২:০৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৩

সৃষ্টিতে ও মৌলিক গুণাবলিতে সব মানুষ যেসব অধিকার ধারণ করে, তাকেই বলে মানবাধিকার বা মৌলিক অধিকার। যেমন স্বাভাবিক জন্মের অধিকার; বেঁচে থাকার বা স্বাভাবিক জীবন ধারণের অধিকার; মৌলিক প্রয়োজনীয় বস্তু ও বিষয় তথা খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষা পাওয়ার অধিকার এবং স্বাভাবিক মৃত্যুর অধিকার। এসব অধিকার মহান আল্লাহ মানুষকে দিয়েছেন। তাই সব মানুষ জন্মগতভাবেই এসব অধিকার লাভ করে থাকে।

মানবাধিকারের বিষয়টি ইসলামের দৃষ্টিতে সর্বত্র সমান। মানুষের সম্মান ও মর্যাদা রক্ষার জন্যই আল্লাহ নবী-রাসূল পাঠিয়েছেন, কিতাব নাজিল করেছেন; শরিয়তের বিধান দিয়েছেন। ইসলামী শরিয়তের বিধানেও মানবাধিকারসংক্রান্ত পঞ্চধারা প্রধান বিবেচ্যরূপে নির্ধারণ করা হয়েছে। যথা জীবন রক্ষা, সম্পদ রক্ষা, বংশ রক্ষা, জ্ঞান রক্ষা ও ধর্ম রক্ষা। মূলত মানবতার সুরক্ষা বা মানবাধিকার প্রতিষ্ঠাই ইসলামের মূল লক্ষ্য ও মুখ্য উদ্দেশ্য।

সর্বশেষ নবী রাসূল সা: মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার অনুপম দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে সফল হয়েছিলেন। তিনি প্রচার করেছেন মানুষ পৃথিবীতে আল্লাহর প্রতিনিধি ও মানুষকে সর্বোত্তম আকৃতিতে সৃষ্টি করা হয়েছে। ইসলাম বর্ণ, গোত্র, ভাষা, সম্পত্তি বা অন্য কোনো মর্যাদার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করে না। এটি একটি সমন্বিত ধারণা। ইসলামে মানবতাবিরোধী সব কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মানবতাবিরোধী অপরাধ বা মানবাধিকার লঙ্ঘনের অপরাধকে ‘কবিরা গুনাহ’ বা মহাপাপরূপে আখ্যায়িত করা হয়েছে এবং এর জন্য দুনিয়ায় চরম শাস্তি ও পরকালে কঠিন আজাবের ঘোষণা দেয়া হয়েছে।

ইসলামে মানবাধিকার বলতে সেসব অধিকারকে বোঝানো হয়, যেগুলো স্বয়ং আল্লাহ তাঁর বান্দাকে প্রদান করেছেন। পৃথিবীর কেউ তা রহিত করার অধিকার রাখে না। আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘আল্লাহ তায়ালা (সৃষ্টিতে ও গুণাবলিতে) তোমাদের একের ওপর অন্যের যে প্রাধান্য দিয়েছেন, তা দ্বারা শ্রেষ্ঠত্ব জাহির কোরো না। প্রত্যেক পুরুষ তা-ই পাবে, যা সে অর্জন করে এবং প্রত্যেক নারী তা-ই পাবে, যা সে অর্জন করে। আর তোমরা আল্লাহর কাছে তাঁর অনুগ্রহ প্রার্থনা করো, নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা সব বিষয়ে অবগত আছেন’ (সূরা নিসা-৩২)। ইসলামে ব্যক্তিগত অধিকারের মধ্যে রয়েছে জীবনের নিরাপত্তা, নারীর অধিকার, হত্যা না করা, গিবত না করা, ক্ষমা প্রদর্শন, সদাচরণ, রাজনৈতিক অধিকার, শ্রমিকের অধিকার, ব্যক্তিগত অধিকারসহ অনেক কিছু। সামাজিক অধিকারের মধ্যে রয়েছে বেঁচে থাকার অধিকার, ব্যক্তি স্বাধীনতা, মালিকানার অধিকার, সাম্যের অধিকার, চুক্তিবদ্ধ হওয়ার অধিকার, লেখা, বলা ও প্রচার কাজের অধিকার। কেউ কারো সম্পদ যেন অন্যায়ভাবে আত্মসাৎ না করে, সে জন্য বিধান দেয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রেও নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সব অপরাধীর সমান শাস্তির বিধান দেয়া হয়েছে।

একটি সুখময় শান্তিপূর্ণ পৃথিবী গড়ে তুলতে ইসলাম প্রদত্ত মানবাধিকারের নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়ন করা সচেতন ও সামর্থ্যবান সব নাগরিকের নৈতিক দায়িত্ব। সব মুসলমানের ঈমানী কর্তব্য।

লেখক : প্রাবন্ধিক ও মুদ্রণ ব্যবস্থাপক, দৈনিক সিলেটের ডাক