নড়াইলের লোহাগড়ায় প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ে করে স্ত্রীর মর্যাদা না দিয়ে উল্টো স্ত্রীকে নির্যাতন ও হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় প্রেমিক স্বামী রায়হানসহ নির্যাতনকারী ৪ জনকে আসামি করে লোহাগড়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেছেন নির্যাতনের শিকার শাপলা খানম।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ইতনা গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের মেয়ে শাপলা খানম ঢাকা বিইউবিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি সম্মান শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী। গত বছরের মে মাসে ওই শিক্ষার্থী থ্রি-পিচ কেনার জন্য পরিবারের লোকজনের সঙ্গে লোহাগড়া বাজারের সরদার ক্লথ স্টোরে যান। ওই দোকানি উপজেলার মদিনা পাড়ার আমির হোসেনের ছেলে রায়হান কৌশলে শিক্ষার্থীর মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে।
পরে বিভিন্ন কথোপকথনের মাধ্যমে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ফুসলিয়ে ও প্রলোভন দিয়ে ফরিদপুর, যশোর, নড়াইল, মদিনাপাড়াস্থ বাড়িসহ লোহাগড়ার একাধিক নিকট আত্মীয়ের বাড়িতে নিয়ে একান্তে সময়ও কাটান।
এক পর্যায়ে গত বছর ২৩ নভেম্বর লোহাগড়া মদিনাপাড়ার আমীর হোসেনের ছেলে রায়হানের সম্মতিতে রেজিস্ট্রি কাবিন মুলে বিয়ে হয়। বিয়ের পর শুরু হয় রায়হানের প্রতারণা। এক পর্যায়ে রায়হান তার বাড়িতে তুলে নিতে অভিভাবকদের
বোঝানোর জন্য ৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। শাপলা ও তার পরিবার উক্ত টাকা দিতে না পারায় রায়হান শাপলার সঙ্গে খারাপ আচরণসহ যোগাযোগ ও আসা-যাওয়া বন্দ
করে দেয়।
বাধ্য হয়ে শাপলা খানম গত ১৮ জানুয়ারি মা-দোলেনা বেগমসহ কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে স্বামী রায়হানের মদিনাপাড়ার বাড়িতে যায়। তখন রায়হান ও তার ভাই রিফাত পিতা আমীর হোসেন পরিবারের লোকজন এক পর্যায়ে যৌতুকের জন্য শাপলাসহ তার সঙ্গীদের মারপিট করে। আসামি রিফাত রায়হান ও রুকাইয়া জান্নাত শাপলা খানমের চুলের মুঠি ধরে এবং লাঠি দিয়ে তলপেটসহ বিভিন্ন জায়গায় মারপিট করে গুরুত্বর জখম করে।
মুমূর্ষ অবস্থায় শাপলা খানমকে তার সঙ্গীসহ স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে নড়াইল সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। এ ঘটনায় গত ২৫ জানুয়ারি শাপলা খানম বাদী হয়ে ৪ জনকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে লোহাগড়া থানায় একটি মামলা দায়ের করে। মামলা নম্বর-১৫। এ বিষয়ে লোহাগড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. নাসির উদ্দিন মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আসামিদের গ্রেফতারের জোর চেষ্টা চলছে।