ঢাকা , মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

নারায়ণগঞ্জে শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ

  • সূর্যোদয় ডেস্ক:
  • আপডেট সময় ১২:০০:৪০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • ১১২০ বার পড়া হয়েছে

বকেয়া বেতন পরিশোধ না করেই নারায়ণগঞ্জে ক্রোনী গ্রুপের অবন্তী কালার টেক্স লিমিটেড কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করেছে মালিকপক্ষ। প্রতিবাদে শনিবার সকাল ৯টার দিকে ঢাকা-মুন্সিগঞ্জ সড়ক অবরোধ করেছে শ্রমিকরা। এসময় তারা মালিকপক্ষের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছে।

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বকেয়া বেতনের দাবিতে কর্মবিরতি দিয়ে শ্রমিকরা বিক্ষোভ করলে বিকেলে কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

‘বেআইনিভাবে শ্রমিক ধর্মঘট ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির’ কারণ দেখিয়ে কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। শনিবার সকালে গার্মেন্টস এসে শ্রমিকরা বন্ধের নোটিশ দেখে রাস্তায় নামেন।

কারখানা বন্ধের নোটিশে বলা হয়েছে, গত ৭ ও ৮ ফেব্রুয়ারি কারখানায় কর্মরত শ্রমিকরা কাজ বন্ধ রেখে ‘বে-আইনীভাবে ধর্মঘট ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে’ কর্মবিরতি পালন করছে। কর্তৃপক্ষ বার বার তাদের স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু করার জন্য অনুরোধ করলেও তারা কর্মবিরতি পালন করে। শ্রমিকদের এ ধরনের কর্মকাণ্ড বেআইনি ধর্মঘটের শামিল বিধায় উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়ে ‘বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ এর ১৩(১) ধারা’ অনুযায়ী কারখানার সকল শাখা/বিভাগ বন্ধ ঘোষণা হলো। কারখানার উৎপাদনের কর্মপরিবেশ স্বাভাবিক ও নিরাপদ না হওয়া পর্যন্ত কারখানাটি বন্ধ থাকবে এবং একইসাথে জানানো যাচ্ছে যে কর্মপরিবেশ স্বাভাবিক ও নিরাপদ হওয়া মাত্র পরবর্তী নোটিশের মাধ্যমে অতি দ্রুত কারখানা চালু করার তারিখ জানানো হবে।

ডিসেম্বর মাসে আংশিক ও জানুয়ারি মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার কর্মবিরতি দিয়ে বিক্ষোভ করেন কারখানাটির শ্রমিকরা। বৃহস্পতিবার বিক্ষোভরত শ্রমিকরা অভিযোগ করেন, তাদের ন্যায্য দাবির আন্দোলনে বাধা দিয়ে বহিরাগত লোকজন কারখানার ভেতরে ঢোকে। পরে শ্রমিকদের রোষের মুখে তারা কারখানা থেকে বেরিয়ে যান। এ সময় কারখানার ভেতরের একটি স্থান থেকে কয়েকটি দেশীয় ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোটা উদ্ধারের কথা জানান শ্রমিকরা। শ্রমিকদের দমন করতে এসব রাতেই কারখানার ভেতর ঢোকানো হয়েছে বলে অভিযোগ তাদের। পরে এই অস্ত্র ও লাঠিসোটা জব্দ করে থানায় নিয়ে যায় ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ।

বৃহস্পতিবার বিক্ষোভের পর ‘বেআইনিভাবে শ্রমিক ধর্মঘট ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির’ কারণ দেখিয়ে বন্ধ ঘোষণা করা হয় কারখানাটি।

এই ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কারখানার দু’জন শ্রমিক বলেন, ‘আমরা কারখানার ভেতর কোনো বিশৃঙ্খলা করিনি। দুই দিন ধরে বেতনের দাবিতে কর্মবিরতি দিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ করেছি। কিন্তু কারখানার মালিক কারখানাটি বন্ধ করে দিয়ে আমাদের সমস্যায় ফেলে দিছে। কারখানা কবে খুলবে তাও বলে নাই কিছু।’

‘বিক্ষোভের সময় আগামী সোমবার বেতন দেয়ার কথা জানিয়েছিল কারখানা কর্তৃপক্ষ। আমাদের বেতন যেহেতু মোবাইল নম্বরে ঢোকে, তাই সোমবার পর্যন্ত আমরা অপেক্ষা করব। বেতন পেলে কাজে যোগ দেবো। না পেলে আমরা আন্দোলনে নামবো বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি’, বলেন শ্রমিকরা।

তবে এই ব্যাপারে ক্রোনী গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এ এইচ আসলাম সানির মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।

শিল্প পুলিশ-৪ এর পরিদর্শক (ইনটেলিজেন্স) সেলিম বাদশা বলেন, কারখানাটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে কোনো প্রকার শ্রমিক অসন্তোষ বা বিশৃঙ্খলা যাতে না হয় সেই ব্যাপারে শিল্প পুলিশ কাজ করছে। তবে কারখানার শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধের ব্যাপারে কারখানা কর্তৃপক্ষ কাজ করছে বলে জেনেছি।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

আজকের সূর্যোদয়

আজকের সূর্যোদয় প্রত্রিকায় আপনাদের স্বাগতম। ‍আমাদের নিউজ পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিয়ে আমাদের পাশে থাকুন।

বরিশালে মুজিবিয়ানের ৮৭ নেতাকে খুঁজছে গোয়েন্দা সংস্থা

নারায়ণগঞ্জে শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ

আপডেট সময় ১২:০০:৪০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

বকেয়া বেতন পরিশোধ না করেই নারায়ণগঞ্জে ক্রোনী গ্রুপের অবন্তী কালার টেক্স লিমিটেড কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করেছে মালিকপক্ষ। প্রতিবাদে শনিবার সকাল ৯টার দিকে ঢাকা-মুন্সিগঞ্জ সড়ক অবরোধ করেছে শ্রমিকরা। এসময় তারা মালিকপক্ষের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছে।

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বকেয়া বেতনের দাবিতে কর্মবিরতি দিয়ে শ্রমিকরা বিক্ষোভ করলে বিকেলে কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

‘বেআইনিভাবে শ্রমিক ধর্মঘট ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির’ কারণ দেখিয়ে কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। শনিবার সকালে গার্মেন্টস এসে শ্রমিকরা বন্ধের নোটিশ দেখে রাস্তায় নামেন।

কারখানা বন্ধের নোটিশে বলা হয়েছে, গত ৭ ও ৮ ফেব্রুয়ারি কারখানায় কর্মরত শ্রমিকরা কাজ বন্ধ রেখে ‘বে-আইনীভাবে ধর্মঘট ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে’ কর্মবিরতি পালন করছে। কর্তৃপক্ষ বার বার তাদের স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু করার জন্য অনুরোধ করলেও তারা কর্মবিরতি পালন করে। শ্রমিকদের এ ধরনের কর্মকাণ্ড বেআইনি ধর্মঘটের শামিল বিধায় উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়ে ‘বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ এর ১৩(১) ধারা’ অনুযায়ী কারখানার সকল শাখা/বিভাগ বন্ধ ঘোষণা হলো। কারখানার উৎপাদনের কর্মপরিবেশ স্বাভাবিক ও নিরাপদ না হওয়া পর্যন্ত কারখানাটি বন্ধ থাকবে এবং একইসাথে জানানো যাচ্ছে যে কর্মপরিবেশ স্বাভাবিক ও নিরাপদ হওয়া মাত্র পরবর্তী নোটিশের মাধ্যমে অতি দ্রুত কারখানা চালু করার তারিখ জানানো হবে।

ডিসেম্বর মাসে আংশিক ও জানুয়ারি মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার কর্মবিরতি দিয়ে বিক্ষোভ করেন কারখানাটির শ্রমিকরা। বৃহস্পতিবার বিক্ষোভরত শ্রমিকরা অভিযোগ করেন, তাদের ন্যায্য দাবির আন্দোলনে বাধা দিয়ে বহিরাগত লোকজন কারখানার ভেতরে ঢোকে। পরে শ্রমিকদের রোষের মুখে তারা কারখানা থেকে বেরিয়ে যান। এ সময় কারখানার ভেতরের একটি স্থান থেকে কয়েকটি দেশীয় ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোটা উদ্ধারের কথা জানান শ্রমিকরা। শ্রমিকদের দমন করতে এসব রাতেই কারখানার ভেতর ঢোকানো হয়েছে বলে অভিযোগ তাদের। পরে এই অস্ত্র ও লাঠিসোটা জব্দ করে থানায় নিয়ে যায় ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ।

বৃহস্পতিবার বিক্ষোভের পর ‘বেআইনিভাবে শ্রমিক ধর্মঘট ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির’ কারণ দেখিয়ে বন্ধ ঘোষণা করা হয় কারখানাটি।

এই ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কারখানার দু’জন শ্রমিক বলেন, ‘আমরা কারখানার ভেতর কোনো বিশৃঙ্খলা করিনি। দুই দিন ধরে বেতনের দাবিতে কর্মবিরতি দিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ করেছি। কিন্তু কারখানার মালিক কারখানাটি বন্ধ করে দিয়ে আমাদের সমস্যায় ফেলে দিছে। কারখানা কবে খুলবে তাও বলে নাই কিছু।’

‘বিক্ষোভের সময় আগামী সোমবার বেতন দেয়ার কথা জানিয়েছিল কারখানা কর্তৃপক্ষ। আমাদের বেতন যেহেতু মোবাইল নম্বরে ঢোকে, তাই সোমবার পর্যন্ত আমরা অপেক্ষা করব। বেতন পেলে কাজে যোগ দেবো। না পেলে আমরা আন্দোলনে নামবো বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি’, বলেন শ্রমিকরা।

তবে এই ব্যাপারে ক্রোনী গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এ এইচ আসলাম সানির মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।

শিল্প পুলিশ-৪ এর পরিদর্শক (ইনটেলিজেন্স) সেলিম বাদশা বলেন, কারখানাটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে কোনো প্রকার শ্রমিক অসন্তোষ বা বিশৃঙ্খলা যাতে না হয় সেই ব্যাপারে শিল্প পুলিশ কাজ করছে। তবে কারখানার শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধের ব্যাপারে কারখানা কর্তৃপক্ষ কাজ করছে বলে জেনেছি।