ঢাকা , সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

পলাশে রাঙানো বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়

  • সূর্যোদয় ডেস্ক:
  • আপডেট সময় ০৬:০৪:৩৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ মার্চ ২০২৪
  • ১১০৯ বার পড়া হয়েছে

শীতের মলিনতা ও রুক্ষতাকে দূরে সরিয়ে প্রকৃতিতে সজীবতা ফিরিয়ে এনেছে ঋতুরাজ বসন্ত। বৃক্ষরাজি ভরে গিয়েছে রঙিন ফুলের ছোঁয়ায়। ফুলের প্রতি দুর্বলতা মানুষের স্বভাবজাত এক বৈশিষ্ট্য। আর ফুলটি যদি হয় পলাশ তাহলে তো আর কোনো কথাই নেই!

কবি কিংবা গীতিকাররা পলাশের বর্ণনা নানানভাবে দিয়েছেন, তাদের কবিতায় আর গানে গানে। রূপসি বাংলার কবি জীবনানন্দ দাশ লিখেছেন—‘যে-দিন সন্ধ্যায় পলাশের বনে হিঙ্গুল মেঘের আলোয় কোকিলের ডাক শুনেছি, সে-দিনই বুঝেছি আমার মৃত্যু অনেক দূরে’।

রূপসী বাংলার কবির সেই জন্মভূমি বরিশালে এক যুগ পার করে আসা দক্ষিণবঙ্গের শ্রেষ্ঠবিদ্যাপীঠ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস পুরো বসন্ত জুড়ে যেন পলাশ ফুলের ছোট্ট এক টুকরো রাজ্য। এই ক্যাম্পাসের মুক্তমঞ্চ এবং কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ সংলগ্ন রাস্তার পাশে সারি সারি অগ্নিরাঙা পলাশ ফুলের চোখ জুড়ানো হাসি মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে শিক্ষক- শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা- কর্মচারীদের মাঝে।

পাশাপাশি আকৃষ্ট করছে ছুটির দিনে ক্যাম্পাসে ঘুরতে আসা দর্শনার্থীদেরও। চোখ জুড়ানো পলাশের হাসি যেন সবুজ ক্যাম্পাসের বুকে এক টুকরো আগুনের স্ফুলিঙ্গ। এ নিয়ে আগ্রহের কমতি নেই শিক্ষার্থীদের মাঝে। শিক্ষার্থীরা ভিড় জমাচ্ছেন পলাশ গাছের নিচে। কেউ ছবি তুলছেন। কেউবা আবার ফুল ছিঁড়ে তার প্রিয়জনের ফুলের খোঁড়াক মেটাচ্ছেন।

এ বিষয়ে কথা হয় ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের রবিউল খানের সাথে তিনি বলেন, ‍‍`পলাশ আমার প্রিয় ফুল। পলাশ শুধু ফুল নয়। পলাশের প্রতিটি লাল পাতা যেন কথা বলে। ক্যাম্পাসের স্বল্প সময়ে আমাদের মনের আনন্দের সাথে মিশে থাকে পলাশ। পলাশ স্মৃতির নিখুঁত অটুট বন্ধন, যেখানে ছুটে বেড়ায় মন। রেখে আসা জীবনের ভালোবাসা আবার পূর্ণ হয় পলাশের আগমনে।

পলাশ ফুল যেন মনে করিয়ে দেয় আমাদের ফেলে আসা অতীতের কথা, কিছুটা চঞ্চলা, উদাসী, ফেলে আসা আবেগের এক বিন্দু মোনালিসা! ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থী আহসান উল্ল্যাহ শুভ পলাশ ফুল নিয়ে তার অভিমত প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, ‘ক্যাম্পাসের খেলার মাঠের পাশের রাস্তাগুলোতে ফুটন্ত পলাশ ফুল যে কারো নজর কাড়তে বাধ্য।

মনে হয় পলাশ তার লাল রঙে নতুনভাবে ক্যাম্পাসকে রাঙিয়ে তুলছে। গাছের ফুটন্ত পলাশ আর ঝড়ে পড়া পলাশ ফুলে চারপাশটায় অনেকটা ভালো লাগা কাজ করে।’ প্রসঙ্গত, পলাশের আরেক নাম ‘কিংশুক’। ইংরেজিতে যা Flame of the forest নামে প্রচলিত। এর বৈজ্ঞানিক নাম Butea monospera (বুটিয়া মনোস্পার্মা)।

গাছটির উচ্চতা গড়ে প্রায় ১২ থেকে ১৫ মিটার। থোকায় থোকায় ফুলে পূর্ণ থাকে শাখাপ্রশাখা। কুঁড়ি দেখতে অনেকটা বাঘের নখের মতো। গাছটির বাকল ধূসর রং বিশিষ্ট । আঁকাবাঁকা শাখাপ্রশাখা ও কান্ডবিশিষ্ট পলাশের পাতা রেশমের মতোই সূক্ষ্ম। বীজ ও ডাল কাটিংয়ের মাধ্যমে পলাশের বংশ বিস্তার করা হয়। সুবাস না থাকলেও সৌন্দর্য ছড়াতে জুড়ি নেই পলাশের। আছে ওষুধি গুণাগুণও।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

আজকের সূর্যোদয়

আজকের সূর্যোদয় প্রত্রিকায় আপনাদের স্বাগতম। ‍আমাদের নিউজ পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিয়ে আমাদের পাশে থাকুন।

বরিশালে মুজিবিয়ানের ৮৭ নেতাকে খুঁজছে গোয়েন্দা সংস্থা

পলাশে রাঙানো বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়

আপডেট সময় ০৬:০৪:৩৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ মার্চ ২০২৪

শীতের মলিনতা ও রুক্ষতাকে দূরে সরিয়ে প্রকৃতিতে সজীবতা ফিরিয়ে এনেছে ঋতুরাজ বসন্ত। বৃক্ষরাজি ভরে গিয়েছে রঙিন ফুলের ছোঁয়ায়। ফুলের প্রতি দুর্বলতা মানুষের স্বভাবজাত এক বৈশিষ্ট্য। আর ফুলটি যদি হয় পলাশ তাহলে তো আর কোনো কথাই নেই!

কবি কিংবা গীতিকাররা পলাশের বর্ণনা নানানভাবে দিয়েছেন, তাদের কবিতায় আর গানে গানে। রূপসি বাংলার কবি জীবনানন্দ দাশ লিখেছেন—‘যে-দিন সন্ধ্যায় পলাশের বনে হিঙ্গুল মেঘের আলোয় কোকিলের ডাক শুনেছি, সে-দিনই বুঝেছি আমার মৃত্যু অনেক দূরে’।

রূপসী বাংলার কবির সেই জন্মভূমি বরিশালে এক যুগ পার করে আসা দক্ষিণবঙ্গের শ্রেষ্ঠবিদ্যাপীঠ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস পুরো বসন্ত জুড়ে যেন পলাশ ফুলের ছোট্ট এক টুকরো রাজ্য। এই ক্যাম্পাসের মুক্তমঞ্চ এবং কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ সংলগ্ন রাস্তার পাশে সারি সারি অগ্নিরাঙা পলাশ ফুলের চোখ জুড়ানো হাসি মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে শিক্ষক- শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা- কর্মচারীদের মাঝে।

পাশাপাশি আকৃষ্ট করছে ছুটির দিনে ক্যাম্পাসে ঘুরতে আসা দর্শনার্থীদেরও। চোখ জুড়ানো পলাশের হাসি যেন সবুজ ক্যাম্পাসের বুকে এক টুকরো আগুনের স্ফুলিঙ্গ। এ নিয়ে আগ্রহের কমতি নেই শিক্ষার্থীদের মাঝে। শিক্ষার্থীরা ভিড় জমাচ্ছেন পলাশ গাছের নিচে। কেউ ছবি তুলছেন। কেউবা আবার ফুল ছিঁড়ে তার প্রিয়জনের ফুলের খোঁড়াক মেটাচ্ছেন।

এ বিষয়ে কথা হয় ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের রবিউল খানের সাথে তিনি বলেন, ‍‍`পলাশ আমার প্রিয় ফুল। পলাশ শুধু ফুল নয়। পলাশের প্রতিটি লাল পাতা যেন কথা বলে। ক্যাম্পাসের স্বল্প সময়ে আমাদের মনের আনন্দের সাথে মিশে থাকে পলাশ। পলাশ স্মৃতির নিখুঁত অটুট বন্ধন, যেখানে ছুটে বেড়ায় মন। রেখে আসা জীবনের ভালোবাসা আবার পূর্ণ হয় পলাশের আগমনে।

পলাশ ফুল যেন মনে করিয়ে দেয় আমাদের ফেলে আসা অতীতের কথা, কিছুটা চঞ্চলা, উদাসী, ফেলে আসা আবেগের এক বিন্দু মোনালিসা! ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থী আহসান উল্ল্যাহ শুভ পলাশ ফুল নিয়ে তার অভিমত প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, ‘ক্যাম্পাসের খেলার মাঠের পাশের রাস্তাগুলোতে ফুটন্ত পলাশ ফুল যে কারো নজর কাড়তে বাধ্য।

মনে হয় পলাশ তার লাল রঙে নতুনভাবে ক্যাম্পাসকে রাঙিয়ে তুলছে। গাছের ফুটন্ত পলাশ আর ঝড়ে পড়া পলাশ ফুলে চারপাশটায় অনেকটা ভালো লাগা কাজ করে।’ প্রসঙ্গত, পলাশের আরেক নাম ‘কিংশুক’। ইংরেজিতে যা Flame of the forest নামে প্রচলিত। এর বৈজ্ঞানিক নাম Butea monospera (বুটিয়া মনোস্পার্মা)।

গাছটির উচ্চতা গড়ে প্রায় ১২ থেকে ১৫ মিটার। থোকায় থোকায় ফুলে পূর্ণ থাকে শাখাপ্রশাখা। কুঁড়ি দেখতে অনেকটা বাঘের নখের মতো। গাছটির বাকল ধূসর রং বিশিষ্ট । আঁকাবাঁকা শাখাপ্রশাখা ও কান্ডবিশিষ্ট পলাশের পাতা রেশমের মতোই সূক্ষ্ম। বীজ ও ডাল কাটিংয়ের মাধ্যমে পলাশের বংশ বিস্তার করা হয়। সুবাস না থাকলেও সৌন্দর্য ছড়াতে জুড়ি নেই পলাশের। আছে ওষুধি গুণাগুণও।