ঢাকা , সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

রমজানে ইচ্ছাকৃত রোজা না রাখার গুনাহ

  • সূর্যোদয় ডেস্ক:
  • আপডেট সময় ১১:৩৬:৫০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ মার্চ ২০২৪
  • ১১১৩ বার পড়া হয়েছে

রোজা ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের অন্যতম। আল্লাহ মুহাম্মদ (সা.)-এর উম্মতের ওপর রমজানের রোজা ফরজ করেছেন। রোজার সুফল হলো এর মাধ্যমে তাকওয়া বা আল্লাহভীতি লাভ হয়।

পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনরা, তোমাদের ওপর রোজাকে ফরজ করা হয়েছে, যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর। যেন তোমরা আল্লাহভীরু হতে পারো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৩)

শরিয়ত অনুমোদিত কারণ ছাড়া রোজা ত্যাগ করা কবিরা গুনাহ। কেননা আল্লাহর নির্দেশ হলো, ‘রমজান মাস, এতে মানুষের দিশারি এবং সৎপথের স্পষ্ট নিদর্শন ও সত্যাসত্যের পার্থক্যকারী কোরআন অবতীর্ণ হয়েছে। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যারা এই মাস পাবে তারা যেন এই মাসে রোজা পালন করে। কেউ অসুস্থ হলে বা সফরে থাকলে অন্য সময় এই সংখ্যা পূরণ করবে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৫)

সুতরাং যে ব্যক্তি শরিয়ত অনুমোদিত কারণ ছাড়া রোজা ত্যাগ করল সে ইসলামের রোকন ও ফরজ বিধান ত্যাগ করল, সে কবিরা গুনাহ করল।

রোজা না রাখার ভয়াবহতা

১. কুফরিসদৃশ কাজ : শরিয়ত অনুমোদিত কারণ ছাড়াই যারা রমজানের রোজা ত্যাগ করে তারা কুফরিসদৃশ কাজ করে। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘ইসলামের হাতল ও দ্বিনের মূল বিষয় তিনটি; যার ওপর ইসলামের ভিত্তি। যে ব্যক্তি তার একটি ত্যাগ করল, সে এমন অবিশ্বাসীতে পরিণত হলো, যার রক্তপাত বৈধ। সেগুলো হচ্ছে, আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই বলে সাক্ষ্য দেওয়া, ফরজ নামাজ ও রমজানের রোজা।’ (মাজমাউল জাওয়াইদ : ১/৪৮)

২. মুসলিম হওয়ার ব্যাপারে সংশয় : ইমাম জাহাবি (রহ.) মুমিনদের কাছে এ কথা প্রমাণিত, যে ব্যক্তি কোনো অসুস্থতা ও শরিয়ত অনুমোদিত কারণ ছাড়া রোজা ছেড়ে দেয় সে মদ্যপ ও ব্যভিচারকারীর চেয়েও নিকৃষ্ট; বরং তারা তার ইসলামের ব্যাপারে সন্দেহ করে এবং তাকে জিন্দিক তথা ধর্মদ্রোহী বলে সন্দেহ করে। (আল-কাবায়ির, পৃষ্ঠা ৬৪)

৩. জাহান্নামে ভয়াবহ শাস্তি : আবু উমামা বাহিলি (রা.) বলেন, আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, একবার আমি ঘুমিয়ে ছিলাম। এ সময় দুজন মানুষ এসে আমার দুই বাহু ধরে আমাকে দুর্গম পাহাড়ে নিয়ে গেল। সেখানে নিয়ে তারা আমাকে বলল, পাহাড়ে উঠুন। আমি বললাম, আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তারা বলল, আমরা আপনার জন্য সহজ করে দিচ্ছি। তাদের আশ্বাস পেয়ে আমি উঠতে লাগলাম এবং পাহাড়ের চূড়া পর্যন্ত গেলাম। সেখানে প্রচণ্ড চিৎকারে শব্দ শোনা যাচ্ছিল। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, এটা কিসের শব্দ? তারা বলল, এটা জাহান্নামিদের চিৎকার। এরপর তারা আমাকে এমন কিছু লোকের কাছে নিয়ে গেল যাদের পায়ের টাকনুতে বেঁধে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। তাদের গাল ছিন্নভিন্ন এবং তা থেকে রক্ত প্রবাহিত হচ্ছে। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, এরা কারা? তারা বলল, এরা হচ্ছে এমন রোজাদার যারা রোজা পূর্ণ করার আগে ইফতার করত।’ (সহিহ ইবনে হিব্বান, হাদিস : ৭৪৯১)

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

আজকের সূর্যোদয়

আজকের সূর্যোদয় প্রত্রিকায় আপনাদের স্বাগতম। ‍আমাদের নিউজ পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিয়ে আমাদের পাশে থাকুন।

বরিশালে মুজিবিয়ানের ৮৭ নেতাকে খুঁজছে গোয়েন্দা সংস্থা

রমজানে ইচ্ছাকৃত রোজা না রাখার গুনাহ

আপডেট সময় ১১:৩৬:৫০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ মার্চ ২০২৪

রোজা ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের অন্যতম। আল্লাহ মুহাম্মদ (সা.)-এর উম্মতের ওপর রমজানের রোজা ফরজ করেছেন। রোজার সুফল হলো এর মাধ্যমে তাকওয়া বা আল্লাহভীতি লাভ হয়।

পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনরা, তোমাদের ওপর রোজাকে ফরজ করা হয়েছে, যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর। যেন তোমরা আল্লাহভীরু হতে পারো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৩)

শরিয়ত অনুমোদিত কারণ ছাড়া রোজা ত্যাগ করা কবিরা গুনাহ। কেননা আল্লাহর নির্দেশ হলো, ‘রমজান মাস, এতে মানুষের দিশারি এবং সৎপথের স্পষ্ট নিদর্শন ও সত্যাসত্যের পার্থক্যকারী কোরআন অবতীর্ণ হয়েছে। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যারা এই মাস পাবে তারা যেন এই মাসে রোজা পালন করে। কেউ অসুস্থ হলে বা সফরে থাকলে অন্য সময় এই সংখ্যা পূরণ করবে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৫)

সুতরাং যে ব্যক্তি শরিয়ত অনুমোদিত কারণ ছাড়া রোজা ত্যাগ করল সে ইসলামের রোকন ও ফরজ বিধান ত্যাগ করল, সে কবিরা গুনাহ করল।

রোজা না রাখার ভয়াবহতা

১. কুফরিসদৃশ কাজ : শরিয়ত অনুমোদিত কারণ ছাড়াই যারা রমজানের রোজা ত্যাগ করে তারা কুফরিসদৃশ কাজ করে। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘ইসলামের হাতল ও দ্বিনের মূল বিষয় তিনটি; যার ওপর ইসলামের ভিত্তি। যে ব্যক্তি তার একটি ত্যাগ করল, সে এমন অবিশ্বাসীতে পরিণত হলো, যার রক্তপাত বৈধ। সেগুলো হচ্ছে, আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই বলে সাক্ষ্য দেওয়া, ফরজ নামাজ ও রমজানের রোজা।’ (মাজমাউল জাওয়াইদ : ১/৪৮)

২. মুসলিম হওয়ার ব্যাপারে সংশয় : ইমাম জাহাবি (রহ.) মুমিনদের কাছে এ কথা প্রমাণিত, যে ব্যক্তি কোনো অসুস্থতা ও শরিয়ত অনুমোদিত কারণ ছাড়া রোজা ছেড়ে দেয় সে মদ্যপ ও ব্যভিচারকারীর চেয়েও নিকৃষ্ট; বরং তারা তার ইসলামের ব্যাপারে সন্দেহ করে এবং তাকে জিন্দিক তথা ধর্মদ্রোহী বলে সন্দেহ করে। (আল-কাবায়ির, পৃষ্ঠা ৬৪)

৩. জাহান্নামে ভয়াবহ শাস্তি : আবু উমামা বাহিলি (রা.) বলেন, আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, একবার আমি ঘুমিয়ে ছিলাম। এ সময় দুজন মানুষ এসে আমার দুই বাহু ধরে আমাকে দুর্গম পাহাড়ে নিয়ে গেল। সেখানে নিয়ে তারা আমাকে বলল, পাহাড়ে উঠুন। আমি বললাম, আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তারা বলল, আমরা আপনার জন্য সহজ করে দিচ্ছি। তাদের আশ্বাস পেয়ে আমি উঠতে লাগলাম এবং পাহাড়ের চূড়া পর্যন্ত গেলাম। সেখানে প্রচণ্ড চিৎকারে শব্দ শোনা যাচ্ছিল। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, এটা কিসের শব্দ? তারা বলল, এটা জাহান্নামিদের চিৎকার। এরপর তারা আমাকে এমন কিছু লোকের কাছে নিয়ে গেল যাদের পায়ের টাকনুতে বেঁধে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। তাদের গাল ছিন্নভিন্ন এবং তা থেকে রক্ত প্রবাহিত হচ্ছে। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, এরা কারা? তারা বলল, এরা হচ্ছে এমন রোজাদার যারা রোজা পূর্ণ করার আগে ইফতার করত।’ (সহিহ ইবনে হিব্বান, হাদিস : ৭৪৯১)