ঢাকা , মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

বাড়ছে দাম নাগালের বাইরে বিদেশি ফল

  • সূর্যোদয় ডেস্ক:
  • আপডেট সময় ১০:৫১:২৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • ১১৩০ বার পড়া হয়েছে

ডলার সংকট ও এলসি (ঋণপত্র) জটিলতার প্রভাব পড়েছে ফল আমদানিতে। আমদানিকারকরা বলছেন, স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় ফল আমদানি অর্ধেকেরও নিচে নেমেছে। পাশাপাশি আমদানি খরচ অনেক বেড়েছে। ফলে আপেল, কমলা, আনারসহ বিদেশ থেকে আনা সব ধরনের ফলের দামও বাড়ছে। এমন পরিস্থিতি বজায় থাকলে আসছে রোজায় ফলের বাড়তি চাহিদা সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে পড়বে। সেই সঙ্গে বেশি দামে কিনে খেতে হবে ফল।

ফলের আমদানিকারকরা বলছেন, ফলের মোট চাহিদার ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ দেশে উৎপাদিত হয়। বাকি ফল দক্ষিণ আফ্রিকা, চীন, ভারত, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, মিশর, পোল্যান্ড, পর্তুগালসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করতে হয়। রমজান মাসে চাহিদা দ্বিগুণ বাড়লে আমদানিও বাড়ে। এ মাসকে ঘিরে খেজুরের আমদানিও অনেক হারে বেড়ে যায়। বাড়তি এ চাহিদা মাথায় রেখে এক থেকে দেড় মাস আগে থেকে আমদানির প্রস্তুতি নেন আমদানিকারকরা। কিন্তু এবার বিদেশি ফল আমদানিতে নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বলে জানান তারা।

রাজধানীর বাদামতলীর আমদানিকারক মেসার্স হারিস এন্টারপ্রাইজের ব্যবসায়ী মো. জুদান আহমেদ আমাদের সময়কে বলেন, ডলার সংকটের কারণে ব্যাংকগুলোতে এলসি খুলতে পারছি না। সরাসরি না বলে দিচ্ছে তারা। স্বাভাবিকের তুলনায় অর্ধেকও আমদানি করতে পারছি না। অপরদিকে রমজান মাসের জন্য আমদানির প্রস্তুতি নিচ্ছি। রোজার এক সপ্তাহ আগে পণ্য পেতে হলে এ মাসের মধ্যেই এলসি খুলতে হবে। অথচ তা করতে পারছি না।

একই কথা জানালেন আরেক আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ঢাকা ফার্মের ব্যবসায়ী মো. কামরুজ্জামানও। তিনি বলেন, ডলার সংকট ও এলসি জটিলতার কারণে আমদানি অনেক কমেছে। এর ফলে বাজারে দামও অনেক বেড়েছে। এভাবে চললে রোজায় ফলের বাড়তি চাহিদা সামাল দেওয়া যাবে না।

ফলের পাইকারি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আপেল ও কমলার দাম বেশি বেড়েছে। মাসখানেক আগেও চীনা হানি, ক্রাউন আপেলের কার্টন (২০ কেজি) যেখানে ২ হাজার ৭০০ থেকে ৩ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে, সেটা এখন বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার ৪০০ থেকে ৪ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত। ফুজি আপেলের কার্টন আগে ৩ হাজার ৮০০ টাকায় পাওয়া গেছে; এখন তা ৫ হাজার ৩০০ থেকে ৫ হাজার ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অপরদিকে চীনা ও সাউথ আফ্রিকার কমলার কার্টন (১০ কেজি) এখন বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ১০০ থেকে ২ হাজার ২০০ টাকায়। ১৫ দিন আগেও যা বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৬০০ থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকায়। মাল্টার দামও বেড়ে প্রতি কার্টন (১৪ কেজি) ২ হাজার ৩০০ থেকে ২ হাজার ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একইভাবে অন্যান্য বিদেশি ফলের দাম বেড়েছে। খুচরা বাজারেও আপেল, কমলা ২৪০ টাকার নিচে মিলছে না। আঙুরের দাম প্রতিকেজি ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা, লাল ও কালো আঙুরের কেজি ৪৫০ টাকা। আনারের দামও এখন ৩৬০ থেকে ৩৮০ টাকা হয়েছে। অন্যান্য বিদেশি ফলের খুচরা দামেও আগুন।

এদিকে খেজুরের আমদানিও এবার ব্যাহত হচ্ছে বলে জানান বাদামতলীর আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান হালিমা ট্রেডার্সের মো. কাকন। তিনি বলেন, আমদানি কমে যাওয়ায় খেজুরের দাম প্রতি পাঁচ কেজিতে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা বাড়তি রয়েছে। রোজায় আরও বাড়তে পারে। রমজান মাসকে কেন্দ্র করে এবার ৫০ টন খেজুর আমদানির প্রস্তুতি নিলেও ২৫ টনও আমদানি করতে পারেননি জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদানীকৃত পণ্য পেতে কমপক্ষে ৪০ দিন সময়ের প্রয়োজন হয়। অর্থাৎ রোজার মাসের জন্য এখনই এলসি খোলা না গেলে দেরি হয়ে যাবে। কিন্তু আমরা এলসি পাচ্ছি না।

ফল ব্যবসায়ীরা বলছেন, এবার রোজা যে মৌসুমে হতে যাচ্ছে, সে সময় দেশি ফল খুব একটা থাকবে না। তখন দেশি ফল চাহিদার ২৫ শতাংশও পূরণ করতে পারবে না। এমন পরিস্থিতিতে বিদেশি ফলেরও সরবরাহ কম থাকলে বাজারদর বেড়ে যাবে।

গত বছরের চেয়ে এবার রোজায় ফলের দাম অনেকখানি বেশি থাকবে বলে ধারণা করছেন বাংলাদেশ ফ্রেস ফ্রুটস ইম্পোর্টার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সিরাজুল ইসলাম। আমাদের সময়কে তিনি বলেন, ডলার সংকটের কারণে আমরা এলসি খুলতে পারছি না। অথচ ব্যাংকের সঙ্গে যোগসাজোশ করে বাইরের অনেকে এলসি পাচ্ছে। কিন্তু যারা নিয়মিত ব্যবসায়ী তারা এলসি পাচ্ছে না। এতে ফলের বাজারে দাম বাড়ছে। এভাবে চলতে থাকলে এবার রোজায় গতবারের চেয়ে ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশ বেশি দামে ফল কিনে খেতে হতে পারে।

এদিকে বিদেশি ফলের আমদানি নিরুৎসাহিত করতে সুপারিশ করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। সংস্থাটি বলছে, বিদেশ থেকে আমদানি করা ড্রাগন, রাম্বুটান, অ্যাভোকাডো ও রকমেলনের মতো বিলাসবহুল ফল সুপারশপ এবং অভিজাত এলাকার ফলের দোকানে অতিউচ্চ দামে বিক্রি হচ্ছে। যার প্রভাব পড়ছে দেশি ফলের বাজারে। পাশাপাশি আপেল, আঙুর ও কমলার মতো বিদেশি ফলের দামও বাড়ছে।

এদিকে ডলারের চলমান সংকট না কাটলে আসন্ন রমজানে মাসেও ফল আমদানির জন্য এলসি খোলার সুযোগ তৈরি হচ্ছে না বলে আভাস দিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। গতকাল সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ফল তো আমাদের দেশে প্রচুর হচ্ছে। এখন আমাদের দেখতে হচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রায় অতিরিক্ত চাপ যেন না পড়ে। এ ছাড়া দেশে যে ফল উৎপাদন হচ্ছে, সে সবেরও একটি মূল্য পাওয়া দরকার। যে জন্য এটি (এলসি) একটু সীমিত করা হয়েছে। সময় ভালো হলেই বিদেশ থেকে ফল আমদানির পথ খুলে দেওয়া হবে। এ সময় ভোক্তাদের ফলাহারের চাহিদা পূরণে আপাতত দেশীয় ফলমূলের ওপর ভরসা করার পরামর্শ দেন তিনি।

এদিকে বাংলাদেশ ফ্রেস ফ্রুটস ইম্পোর্টার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, এবার রোজা যে সময়টায় হচ্ছে তখন বেশির ভাগ দেশি ফলের মৌসুম শেষ। শীতের শেষে কলাও তেমন পাওয়া যাবে না। তরমুজ হয়তো আগাম কিছু পাওয়া যেতে পারে। পেয়ারা, পেঁপে, বরই, আনারসসহ যেসব দেশি ফল পাওয়া যাবে, তা চাহিদার বিপরীতে অনেক কম। এমন পরিস্থিতিতে বাজারে বিদেশি ফল পাওয়া না গেলে ফলের বাজারে অস্থিরতা দেখা দেবে। তখন কেবল বিদেশি ফলই নয়, দেশি ফলও অতিরিক্ত দামে কিনে খেতে হবে।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

আজকের সূর্যোদয়

আজকের সূর্যোদয় প্রত্রিকায় আপনাদের স্বাগতম। ‍আমাদের নিউজ পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিয়ে আমাদের পাশে থাকুন।

বরিশালে মুজিবিয়ানের ৮৭ নেতাকে খুঁজছে গোয়েন্দা সংস্থা

বাড়ছে দাম নাগালের বাইরে বিদেশি ফল

আপডেট সময় ১০:৫১:২৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

ডলার সংকট ও এলসি (ঋণপত্র) জটিলতার প্রভাব পড়েছে ফল আমদানিতে। আমদানিকারকরা বলছেন, স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় ফল আমদানি অর্ধেকেরও নিচে নেমেছে। পাশাপাশি আমদানি খরচ অনেক বেড়েছে। ফলে আপেল, কমলা, আনারসহ বিদেশ থেকে আনা সব ধরনের ফলের দামও বাড়ছে। এমন পরিস্থিতি বজায় থাকলে আসছে রোজায় ফলের বাড়তি চাহিদা সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে পড়বে। সেই সঙ্গে বেশি দামে কিনে খেতে হবে ফল।

ফলের আমদানিকারকরা বলছেন, ফলের মোট চাহিদার ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ দেশে উৎপাদিত হয়। বাকি ফল দক্ষিণ আফ্রিকা, চীন, ভারত, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, মিশর, পোল্যান্ড, পর্তুগালসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করতে হয়। রমজান মাসে চাহিদা দ্বিগুণ বাড়লে আমদানিও বাড়ে। এ মাসকে ঘিরে খেজুরের আমদানিও অনেক হারে বেড়ে যায়। বাড়তি এ চাহিদা মাথায় রেখে এক থেকে দেড় মাস আগে থেকে আমদানির প্রস্তুতি নেন আমদানিকারকরা। কিন্তু এবার বিদেশি ফল আমদানিতে নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বলে জানান তারা।

রাজধানীর বাদামতলীর আমদানিকারক মেসার্স হারিস এন্টারপ্রাইজের ব্যবসায়ী মো. জুদান আহমেদ আমাদের সময়কে বলেন, ডলার সংকটের কারণে ব্যাংকগুলোতে এলসি খুলতে পারছি না। সরাসরি না বলে দিচ্ছে তারা। স্বাভাবিকের তুলনায় অর্ধেকও আমদানি করতে পারছি না। অপরদিকে রমজান মাসের জন্য আমদানির প্রস্তুতি নিচ্ছি। রোজার এক সপ্তাহ আগে পণ্য পেতে হলে এ মাসের মধ্যেই এলসি খুলতে হবে। অথচ তা করতে পারছি না।

একই কথা জানালেন আরেক আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ঢাকা ফার্মের ব্যবসায়ী মো. কামরুজ্জামানও। তিনি বলেন, ডলার সংকট ও এলসি জটিলতার কারণে আমদানি অনেক কমেছে। এর ফলে বাজারে দামও অনেক বেড়েছে। এভাবে চললে রোজায় ফলের বাড়তি চাহিদা সামাল দেওয়া যাবে না।

ফলের পাইকারি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আপেল ও কমলার দাম বেশি বেড়েছে। মাসখানেক আগেও চীনা হানি, ক্রাউন আপেলের কার্টন (২০ কেজি) যেখানে ২ হাজার ৭০০ থেকে ৩ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে, সেটা এখন বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার ৪০০ থেকে ৪ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত। ফুজি আপেলের কার্টন আগে ৩ হাজার ৮০০ টাকায় পাওয়া গেছে; এখন তা ৫ হাজার ৩০০ থেকে ৫ হাজার ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অপরদিকে চীনা ও সাউথ আফ্রিকার কমলার কার্টন (১০ কেজি) এখন বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ১০০ থেকে ২ হাজার ২০০ টাকায়। ১৫ দিন আগেও যা বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৬০০ থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকায়। মাল্টার দামও বেড়ে প্রতি কার্টন (১৪ কেজি) ২ হাজার ৩০০ থেকে ২ হাজার ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একইভাবে অন্যান্য বিদেশি ফলের দাম বেড়েছে। খুচরা বাজারেও আপেল, কমলা ২৪০ টাকার নিচে মিলছে না। আঙুরের দাম প্রতিকেজি ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা, লাল ও কালো আঙুরের কেজি ৪৫০ টাকা। আনারের দামও এখন ৩৬০ থেকে ৩৮০ টাকা হয়েছে। অন্যান্য বিদেশি ফলের খুচরা দামেও আগুন।

এদিকে খেজুরের আমদানিও এবার ব্যাহত হচ্ছে বলে জানান বাদামতলীর আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান হালিমা ট্রেডার্সের মো. কাকন। তিনি বলেন, আমদানি কমে যাওয়ায় খেজুরের দাম প্রতি পাঁচ কেজিতে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা বাড়তি রয়েছে। রোজায় আরও বাড়তে পারে। রমজান মাসকে কেন্দ্র করে এবার ৫০ টন খেজুর আমদানির প্রস্তুতি নিলেও ২৫ টনও আমদানি করতে পারেননি জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদানীকৃত পণ্য পেতে কমপক্ষে ৪০ দিন সময়ের প্রয়োজন হয়। অর্থাৎ রোজার মাসের জন্য এখনই এলসি খোলা না গেলে দেরি হয়ে যাবে। কিন্তু আমরা এলসি পাচ্ছি না।

ফল ব্যবসায়ীরা বলছেন, এবার রোজা যে মৌসুমে হতে যাচ্ছে, সে সময় দেশি ফল খুব একটা থাকবে না। তখন দেশি ফল চাহিদার ২৫ শতাংশও পূরণ করতে পারবে না। এমন পরিস্থিতিতে বিদেশি ফলেরও সরবরাহ কম থাকলে বাজারদর বেড়ে যাবে।

গত বছরের চেয়ে এবার রোজায় ফলের দাম অনেকখানি বেশি থাকবে বলে ধারণা করছেন বাংলাদেশ ফ্রেস ফ্রুটস ইম্পোর্টার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সিরাজুল ইসলাম। আমাদের সময়কে তিনি বলেন, ডলার সংকটের কারণে আমরা এলসি খুলতে পারছি না। অথচ ব্যাংকের সঙ্গে যোগসাজোশ করে বাইরের অনেকে এলসি পাচ্ছে। কিন্তু যারা নিয়মিত ব্যবসায়ী তারা এলসি পাচ্ছে না। এতে ফলের বাজারে দাম বাড়ছে। এভাবে চলতে থাকলে এবার রোজায় গতবারের চেয়ে ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশ বেশি দামে ফল কিনে খেতে হতে পারে।

এদিকে বিদেশি ফলের আমদানি নিরুৎসাহিত করতে সুপারিশ করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। সংস্থাটি বলছে, বিদেশ থেকে আমদানি করা ড্রাগন, রাম্বুটান, অ্যাভোকাডো ও রকমেলনের মতো বিলাসবহুল ফল সুপারশপ এবং অভিজাত এলাকার ফলের দোকানে অতিউচ্চ দামে বিক্রি হচ্ছে। যার প্রভাব পড়ছে দেশি ফলের বাজারে। পাশাপাশি আপেল, আঙুর ও কমলার মতো বিদেশি ফলের দামও বাড়ছে।

এদিকে ডলারের চলমান সংকট না কাটলে আসন্ন রমজানে মাসেও ফল আমদানির জন্য এলসি খোলার সুযোগ তৈরি হচ্ছে না বলে আভাস দিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। গতকাল সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ফল তো আমাদের দেশে প্রচুর হচ্ছে। এখন আমাদের দেখতে হচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রায় অতিরিক্ত চাপ যেন না পড়ে। এ ছাড়া দেশে যে ফল উৎপাদন হচ্ছে, সে সবেরও একটি মূল্য পাওয়া দরকার। যে জন্য এটি (এলসি) একটু সীমিত করা হয়েছে। সময় ভালো হলেই বিদেশ থেকে ফল আমদানির পথ খুলে দেওয়া হবে। এ সময় ভোক্তাদের ফলাহারের চাহিদা পূরণে আপাতত দেশীয় ফলমূলের ওপর ভরসা করার পরামর্শ দেন তিনি।

এদিকে বাংলাদেশ ফ্রেস ফ্রুটস ইম্পোর্টার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, এবার রোজা যে সময়টায় হচ্ছে তখন বেশির ভাগ দেশি ফলের মৌসুম শেষ। শীতের শেষে কলাও তেমন পাওয়া যাবে না। তরমুজ হয়তো আগাম কিছু পাওয়া যেতে পারে। পেয়ারা, পেঁপে, বরই, আনারসসহ যেসব দেশি ফল পাওয়া যাবে, তা চাহিদার বিপরীতে অনেক কম। এমন পরিস্থিতিতে বাজারে বিদেশি ফল পাওয়া না গেলে ফলের বাজারে অস্থিরতা দেখা দেবে। তখন কেবল বিদেশি ফলই নয়, দেশি ফলও অতিরিক্ত দামে কিনে খেতে হবে।