ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম ওরফে আনার হত্যা মামলায় নেপালে পলাতক আসামি মো. সিয়াম হোসেনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
গতকাল রবিরায় ঢাকার অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুল হক এ পরোয়ানা জারি করেছেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের সহকারি পুলিশ কমিশনার মাহফুজুর রহমান এ পরোয়ানা জারির আবেদন করেন।
আজ সোমবার শেরেবাংলা নগর থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখার উপপরিদর্শক জালাল উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যায় জড়িত সিয়াম হোসেনকে বাংলাদেশ পুলিশের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরোর (এনসিবি) তথ্যে নেপালে আটক করা হয়েছে। বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী এই ব্যক্তি কলকাতার নিউ টাউনের সঞ্জিভা গার্ডেনসের ফ্ল্যাটে আনারকে খুনের পর নেপালে আত্মগোপন করে। এরপরই ঢাকার পুলিশ তার অবস্থান নিশ্চিত হয়ে কাঠমান্ডু এনসিবিতে তাকে আটকের জন্য অনুরোধ জানিয়ে মেইল পাঠায়।
পুলিশ সূত্র বলছে, সিয়ামকে বাংলাদেশে পুলিশের হাতে তুলে দিতে চাচ্ছে কাঠমান্ডু পুলিশ। এরইমধ্যে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের নেতৃত্বে তিন সদস্যের দল নেপাল গেছেন। তবে দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের বন্দিবিনিময় চুক্তি না থাকায় সিয়ামকে ফেরাতে জটিলতা দেখা দিয়েছে।
আনোয়ারুল আজিমের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস শেরেবাংলা নগর থানায় এ মামলা করেন।
মামলায় মুনতারিন ফেরদৌস ডরিন উল্লেখ করেছেন, মানিক মিয়া এভিনিউয়ের বাসায় আমরা সপরিবারে বসবাস করি। গত ৯ মে রাত ৮টার দিকে আমার বাবা আনোয়ারুল আজিম আনার গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহ যাওয়ার উদ্দেশে যাত্রা করেন। গত ১১ মে বিকাল পৌনে ৫টার দিকে বাবার সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বললে বাবার কথাবার্তায় কিছুটা অসংলগ্ন মনে হয়। এরপর বাবার মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল দিলেও বন্ধ পাই।
গত ১৩ মে বাবার ভারতীয় নম্বর থেকে উজির মামার হোয়াটসঅ্যাপে একটি ক্ষুদে বার্তা আসে। এতে লিখা ছিল, ‘আমি হঠাৎ করে দিল্লি যাচ্ছি, আমার সঙ্গে ভিআইপি রয়েছে। আমি অমিত সাহার কাজে নিউটাউন যাচ্ছি। আমাকে ফোন দেওয়ার দরকার নাই। আমি পরে ফোন দেব।’ এছাড়া আরও কয়েকটি বার্তা আসে। ক্ষুদে বার্তাগুলো আমার বাবার মোবাইল ফোন ব্যবহার করে অপহরণকারীরা করে থাকতে পারে।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, বিভিন্ন জায়গায় বাবার খোঁজ করতে থাকি। কোনও সন্ধান না পেয়ে তার বন্ধু গোপাল বিশ্বাস বাদী হয়ে ভারতীয় বারানগর পুলিশ স্টেশনে সাধারণ ডায়েরি করেন। এরপরও আমরা খোঁজাখুজি অব্যাহত রাখি। পরবর্তীতে বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানতে পারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে পরস্পর যোগসাজসে বাবাকে অপহরণ করেছেন।
এদিকে এ মামলায় শিমুল ভুইঁয়া ওরফে শিহাব ওরফে ফজল মোহাম্মদ ভুইঁয়া ওরফে আমানুল্যাহ সাঈদ, তানভীর ভুইঁয়া ও সেলেষ্টি রহমান প্রথম দফায় ৮ দিনের রিমান্ড শেষে দ্বিতীয় দফায় ৫ দিনের রিমান্ডে রয়েছেন।