অনুসন্ধানে দুদক বেনজীর ও তার স্ত্রী-সন্তানদের বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের তথ্য এবং কয়েকটি ব্যাংক হিসাবে তাদের অস্বাভাবিক লেনদেনের প্রমাণ পাওয়ার কথা জানিয়ে ২৮ জুলাই অগ্রগতি প্রতিবেদন দেয়। সেই প্রতিবেদন গ্রহণ করে আদেশ দেন হাইকোর্ট।
আদালতে দুদকের প্রতিবেদনটি তুলে দরে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। রিটকারী পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এম সারোয়ার হোসেন। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। বেনজীর আহমেদের পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না।
আইনজীবী খুরশীদ আলম খান কালের কণ্ঠকে বলেন, বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের অনুসন্ধান নিয়ে দুদককে অগ্রগতি প্রতিবেদন চেয়েছিলেন হাইকোর্ট। সেই প্রতিবেদনটি দাখিল করা হয়েছে। আদালত প্রতিবেদনটি গ্রহণ করে দুদককে অনুসন্ধান চালিয়ে যেতে বলেছেন। আগামী ৫ নভেম্বর পরবর্তী শুনানির তারিখ রাখা হয়েছে।
‘বেনজীরের ঘরে আলাদীনের চেরাগ’ শিরোনামে ৩১ মার্চ অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করে কালের কণ্ঠ। এর দুই দিনের মাথায় ২ এপ্রিল ‘বনের জমিতে বেনজীরের রিসোর্ট’ শিরোনামে দ্বিতীয় দফার অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ১৭(গ) ধারা অনুসারে কমিশন কোনো অভিযোগে স্বউদ্যোগে অনুসন্ধান শুরু করতে পারে। কিন্তু বেনজীর আহমেদের অনিয়ম-দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার নিয়ে পর পর দুটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশের পরও কমিশন অনুসন্ধানের উদ্যোগ নেয়নি। যে কারণে ৪ এপ্রিল দুদক চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়ে অনুসন্ধানের উদ্যোগ নিতে অনুরোধ করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সালাহ উদ্দিন রিগ্যান। এতে কাজ না হওয়ায় ১৮ এপ্রিল বিবাদীদের আইনি নোটিশ দেন তিনি। নোটিশ প্রাপ্তির তিন দিনের মধ্যে স্বউদ্যোগে অনুসন্ধানের অনুরোধ করা হয়। সাড়া না পেয়ে ২১ এপ্রিল হাইকোর্টে রিট করেন তিনি। রিটে বেনজীর আহমেদের অনিয়ম-দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার অনুসন্ধোনে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করেন তিনি।
দুদক চেয়ারম্যান, কমিশনের তদন্ত ও অনুসন্ধান বিভাগের দুই কমিশনার ও দুদক সচিবকে বিবাদী করা হয় রিটে। সেই রিটটি ২৩ এপ্রিল শুনানিতে ওঠে। শুনানিতে দুদকের আইনজীবী আদালতকে বলেন, বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অনুসন্ধানে ২২ এপ্রিল তিন সদস্যের একটি অনুসন্ধান টিম গঠন করা হয়েছে। ওই টিম অনুসন্ধান শুরু করেছে। পরে আদালত রিটে রুল জারি না করে অনুসন্ধান কাজের অগ্রগতি প্রতিবেদন চান। দুই মাসের মধ্যে এ প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। সেই ধারাবাহিকতায় ২৮ জুলাই হাইকোর্টে অগ্রগতি প্রতিবেদন দেয় দুদক। প্রতিবেদনটি সোমবার আদালতে উপস্থাপনের পর শুনানি হয়।