ঢাকা , সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

৩০ লাখ টাকার জন্য ভাড়াটে দিয়ে বাবাকে খুন করান ছেলে

  • সূর্যোদয় ডেস্ক:
  • আপডেট সময় ০৭:৪৮:৪৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • ১১৩৭ বার পড়া হয়েছে

ফতুল্লায় বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হালিমকে (৭২) হত্যার চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে। বোনদের ঠকিয়ে ব্যাংক থেকে তোলা ৩০ লাখ টাকা একাই আত্মসাতের লোভে ভাড়াটে খুনি দিয়ে বাবা আব্দুল হালিমকে হত্যা করিয়েছেন তার ছেলে এইচ এম মাসুদ। আর ঘাতক ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকের চালক রুবেলকে গ্রেফতার করেছে পিবিআই। তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে হত্যার আদ্যোপান্ত বর্ণনা করেছেন।

শনিবার বিকেলে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইমরান মোল্লার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন আসামি রুবেল। মামলার অপর আসামি মাসুদকে গ্রেফতারের জন্য চেষ্টা চলছে।

রোববার দুপুরে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) নারায়ণগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের পুলিশ সুপার মনিরুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান।

এসপি জানান, মৃত্যুর ২ মাস আগে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হালিমের ব্যাংক থেকে তোলা ৩০ লাখ টাকা আত্মসাতের লোভে ৫ লাখ টাকায় ভাড়াটে খুনি দিয়ে তাকে হত্যা করান তার ছেলে এইচএম মাসুদ। হত্যা নিশ্চিত ঘটনার সাথে জড়িত আলামত ও বাড়ির সিসিটিভি ক্যামেরার হার্ডড্রাইভ (ডিভিআর) উদ্ধারের পর বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে মামলার তদন্তকারী সংস্থা পিবিআই।

এর আগে, গত ১ ফেব্রুয়ারি সকালে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার এনায়েতনগর ইউনিয়নের মাওলাবাজার এলাকায় নিজ বাসা থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হালিমের (৭২) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই সময় তার একমাত্র ছেলে মাসুদ (৪২) দাবি করেন, ৩১ জানুয়ারি দিবাগত রাতে তাদের বাসায় ঢুকে তার হাত, পা ও মুখ বেঁধে বৃদ্ধ বাবাকে খুন করে নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার লুট করে নিয়ে গেছে ডাকাত দল।

পিবিআই আরো জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে আসামি রুবেল জানিয়েছে, ব্যাংক থেকে তোলা বাবার ৩০ লাখ টাকা একাই আত্মসাতের লোভে মাসুদ নিজের বাবাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। মাসুদ ৫ লাখ টাকার বিনিময়ে রুবেলকে ভাড়া করেন। ঘটনার দিন রাত ১০টায় মাসুদের ফোন পেয়ে তাদের বাড়িতে যান রুবেল। রুবেলের জন্য বাসার কলাপসিবল গেট ও ফ্ল্যাটের দরজা আগে থেকেই খোলা রাখেন মাসুদ। রাত ১১টার দিকে আব্দুল হালিম ঘুমিয়ে পড়লে মাসুদ তার বাবার হাত-পা চেপে ধরেন এবং রুবেল তার গলা টিপে শ্বাসরোধের চেষ্টা করেন। বৃদ্ধ আব্দুল হালিম চিৎকার করার চেষ্টা করলে রুবেল তার মুখের ওপর বালিশ চাপা দেন। পরে মাসুদ তার কক্ষে থাকা রক্তচাপ মাপা যন্ত্রের সাহায্যে মৃত্যুর ব্যাপারে নিশ্চিত হন। পরিকল্পনা অনুযায়ী রুবেলকে ৫ লাখ টাকা দিয়ে সিসিটিভি ক্যামেরার হার্ডড্রাইভ বাইরে কোথাও ফেলে দিতে বলেন মাসুদ। পরে হত্যার ঘটনা ভিন্ন খাতে নিতে ডাকাতির নাটক সাজাতে মাসুদকে পাটের দড়ি দিয়ে হাত, পা ও গামছা দিয়ে মুখ বেঁধে রেখে যান রুবেল।

পিবি আইয়ের পুলিশ সুপার মনিরুল ইসলাম বলেন, শনিবার যাত্রাবাড়ি থেকে রুবেলকে তার বোনের বাসা থেকে গ্রেফতারের পর তার দেয়া তথ্যমতে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় ভাড়া বাসার ড্রেসিং টেবিলের ড্রয়ার থেকে ৪ লাখ ৪৩ হাজার টাকা জব্দ করা হয়। এছাড়া নিহত আব্দুল হালিমের বাড়ির পেছন থেকে সিসিটিভি ক্যামেরার হার্ডড্রাইভ উদ্ধার করা হয়। আলামত হিসেবে হত্যায় ব্যবহৃত পাটের দড়ি, গামছা, বালিশ, ডিজিটাল ব্লাড প্রেশার মাপার মেশিন জব্দ করা হয়।

গত ১ ফেব্রুয়ারি রাতে ফতুল্লা মডেল থানায় অজ্ঞাত আসামি করে মামলা করেন নিহতের জামাতা জাহের আলী। এ মামলাটি থানা পুলিশের পাশাপাশি পিবিআই ছায়াতদন্তের পর ১০ ফেব্রুয়ারি মামলার তদন্তের দায়িত্ব নেয় পিবিআই।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

আজকের সূর্যোদয়

আজকের সূর্যোদয় প্রত্রিকায় আপনাদের স্বাগতম। ‍আমাদের নিউজ পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিয়ে আমাদের পাশে থাকুন।

বরিশালে মুজিবিয়ানের ৮৭ নেতাকে খুঁজছে গোয়েন্দা সংস্থা

৩০ লাখ টাকার জন্য ভাড়াটে দিয়ে বাবাকে খুন করান ছেলে

আপডেট সময় ০৭:৪৮:৪৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

ফতুল্লায় বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হালিমকে (৭২) হত্যার চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে। বোনদের ঠকিয়ে ব্যাংক থেকে তোলা ৩০ লাখ টাকা একাই আত্মসাতের লোভে ভাড়াটে খুনি দিয়ে বাবা আব্দুল হালিমকে হত্যা করিয়েছেন তার ছেলে এইচ এম মাসুদ। আর ঘাতক ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকের চালক রুবেলকে গ্রেফতার করেছে পিবিআই। তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে হত্যার আদ্যোপান্ত বর্ণনা করেছেন।

শনিবার বিকেলে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইমরান মোল্লার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন আসামি রুবেল। মামলার অপর আসামি মাসুদকে গ্রেফতারের জন্য চেষ্টা চলছে।

রোববার দুপুরে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) নারায়ণগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের পুলিশ সুপার মনিরুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান।

এসপি জানান, মৃত্যুর ২ মাস আগে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হালিমের ব্যাংক থেকে তোলা ৩০ লাখ টাকা আত্মসাতের লোভে ৫ লাখ টাকায় ভাড়াটে খুনি দিয়ে তাকে হত্যা করান তার ছেলে এইচএম মাসুদ। হত্যা নিশ্চিত ঘটনার সাথে জড়িত আলামত ও বাড়ির সিসিটিভি ক্যামেরার হার্ডড্রাইভ (ডিভিআর) উদ্ধারের পর বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে মামলার তদন্তকারী সংস্থা পিবিআই।

এর আগে, গত ১ ফেব্রুয়ারি সকালে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার এনায়েতনগর ইউনিয়নের মাওলাবাজার এলাকায় নিজ বাসা থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হালিমের (৭২) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই সময় তার একমাত্র ছেলে মাসুদ (৪২) দাবি করেন, ৩১ জানুয়ারি দিবাগত রাতে তাদের বাসায় ঢুকে তার হাত, পা ও মুখ বেঁধে বৃদ্ধ বাবাকে খুন করে নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার লুট করে নিয়ে গেছে ডাকাত দল।

পিবিআই আরো জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে আসামি রুবেল জানিয়েছে, ব্যাংক থেকে তোলা বাবার ৩০ লাখ টাকা একাই আত্মসাতের লোভে মাসুদ নিজের বাবাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। মাসুদ ৫ লাখ টাকার বিনিময়ে রুবেলকে ভাড়া করেন। ঘটনার দিন রাত ১০টায় মাসুদের ফোন পেয়ে তাদের বাড়িতে যান রুবেল। রুবেলের জন্য বাসার কলাপসিবল গেট ও ফ্ল্যাটের দরজা আগে থেকেই খোলা রাখেন মাসুদ। রাত ১১টার দিকে আব্দুল হালিম ঘুমিয়ে পড়লে মাসুদ তার বাবার হাত-পা চেপে ধরেন এবং রুবেল তার গলা টিপে শ্বাসরোধের চেষ্টা করেন। বৃদ্ধ আব্দুল হালিম চিৎকার করার চেষ্টা করলে রুবেল তার মুখের ওপর বালিশ চাপা দেন। পরে মাসুদ তার কক্ষে থাকা রক্তচাপ মাপা যন্ত্রের সাহায্যে মৃত্যুর ব্যাপারে নিশ্চিত হন। পরিকল্পনা অনুযায়ী রুবেলকে ৫ লাখ টাকা দিয়ে সিসিটিভি ক্যামেরার হার্ডড্রাইভ বাইরে কোথাও ফেলে দিতে বলেন মাসুদ। পরে হত্যার ঘটনা ভিন্ন খাতে নিতে ডাকাতির নাটক সাজাতে মাসুদকে পাটের দড়ি দিয়ে হাত, পা ও গামছা দিয়ে মুখ বেঁধে রেখে যান রুবেল।

পিবি আইয়ের পুলিশ সুপার মনিরুল ইসলাম বলেন, শনিবার যাত্রাবাড়ি থেকে রুবেলকে তার বোনের বাসা থেকে গ্রেফতারের পর তার দেয়া তথ্যমতে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় ভাড়া বাসার ড্রেসিং টেবিলের ড্রয়ার থেকে ৪ লাখ ৪৩ হাজার টাকা জব্দ করা হয়। এছাড়া নিহত আব্দুল হালিমের বাড়ির পেছন থেকে সিসিটিভি ক্যামেরার হার্ডড্রাইভ উদ্ধার করা হয়। আলামত হিসেবে হত্যায় ব্যবহৃত পাটের দড়ি, গামছা, বালিশ, ডিজিটাল ব্লাড প্রেশার মাপার মেশিন জব্দ করা হয়।

গত ১ ফেব্রুয়ারি রাতে ফতুল্লা মডেল থানায় অজ্ঞাত আসামি করে মামলা করেন নিহতের জামাতা জাহের আলী। এ মামলাটি থানা পুলিশের পাশাপাশি পিবিআই ছায়াতদন্তের পর ১০ ফেব্রুয়ারি মামলার তদন্তের দায়িত্ব নেয় পিবিআই।