ঢাকা , সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

‘স্বপ্নের রাষ্ট্রে’ পূজার ছুটি পাবে সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‌্যাবও: ড. ইউনূস

  • সূর্যোদয় ডেস্ক:
  • আপডেট সময় ১১:২৯:৫৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৪
  • ১০৮৬ বার পড়া হয়েছে

দুর্গাপূজাসহ বিভিন্ন আনন্দ উৎসবের আয়োজনে আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদেরকেও যেন ছুটিতে পাঠানো যায় এমন রাষ্ট্রের ‘স্বপ্ন’ দেখছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সেনাবাহিনী, র‌্যাব ও পুলিশের সহায়তায় পূজার মতো উৎসবের আয়োজনকে আমাদের সমাজের ব্যর্থতা হিসেবে মন্তব্য করেছেন তিনি।

শনিবার (অক্টোবর ১২) বিকালে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে পূজা পরিদর্শন এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ধন্যবাদ দিয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, অত্যন্ত গৌরবপূর্ণ দুর্গাপূজা আমরা করতে পেরেছি সবাই মিলে। এর পেছনে সরকারের বড় একটা প্রতিষ্ঠান আমাদের সহযোগিতা করেছে। তারা হলো, পুলিশ, সেনাবাহিনী, র‌্যাব, বিজিবি যত রকমের সরকারের কাছে শান্তিরক্ষা বাহিনী ছিল সবাই।

এসময় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সবাই আন্তরিকভাবে কাজ করেছে। এটা কঠিন কাজ, সহজ কাজ না। কঠিন কাজ অত্যন্ত নিখুঁতভাবে করতে পেরেছে। এই কঠিন কাজটি অত্যন্ত নিখুঁতভাবে সমাধা করতে পেরেছে। সবাই মিলে কাজ করলে যে সফলতা পাওয়া যায়, সেটা তারা প্রমাণ করেছে। তারা কষ্ট করার কারণে আমরা ছুটি উপভোগ করতে পারছি। তাদের ধন্যবাদ জানাই। আমরা এমন একটি রাষ্ট্র গঠন করতে পারি খুব শিগগিরই যেখানে তারাও ছুটি উপভোগ করবে। আমরাও ছুটি উপভোগ করব।

“তাদের (আইনশৃঙ্খলা বাহিনী) ছুটি বিসর্জন দিয়ে আমাদের আনন্দ করতে হবে না। এ ‘অপরাধবোধ’ থেকে আমরা মুক্ত হয়ে যাব। দেশের নাগরিক হিসেবে উৎসব পালন করব। কেউ আমাদের বাধা দিতে পারবে না।

দুর্গাপূজাসহ বিভিন্ন উৎসব পালনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তা নেওয়া প্রসঙ্গে ড. ইউনূস বলেন, নিজেদের মনে করিয়ে দেই, সেনাবাহিনীকে দিয়ে, পুলিশকে দিয়ে, র‌্যাবকে দিয়ে আমাদের আনন্দ, উৎসব করার আয়োজন করতে যাওয়াটা আমাদের ব্যর্থতা।

এই ব্যর্থতাটাকে আমরা গ্রহণ করেছি, এটা আমাদের ব্যর্থতা। আমরা সমাজটাকে এমনভাবে গড়ে তুলতে পারি নাই যে, কোনো জায়গায় একটা অংশ আনন্দ-উৎসব করবে, কাউকে বাদ দিয়ে নয়, সবাইকে নিয়ে আনন্দ উৎসব করব। এরকম সমাজকে নিয়ে আমরা কী করব? এরকম সমাজ কি আমরা চাই। আমরা এরকম সমাজ চাই না।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, সমাজের যেকোনো অংশ উৎসব করবে, আমরা সবাই মিলে সেখানে শরিক হব, তারা যেন নির্বিঘ্নে, আনন্দসহকারে উৎসব করতে পারে, তারা নিজেরা এই আনন্দে অংশ নেবে এটাই তো হওয়ার কথা।

কিন্তু আমরা ওটা করতে পারছি না। এটা করতে পারছি না বলেই আমাদের ছাত্র-জনতার, শ্রমিক এরা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে একটা নতুন বাংলাদেশ গঠনের স্বপ্ন নিয়ে আজকে আমাদের সুযোগ করে দিয়েছে।

তিনি বলেন, এই যে আমরা আপনাদের শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাধ্যমে আপনাদের উৎসবের সুযোগ করে দিলাম। এটা যেন ভবিষ্যতে আর কখনো করতে না হয়, সে জন্য আমরা একযোগে কাজ করব।

ড. ইউনূস বলেন, আমরা এমন এক বাংলাদেশ তৈরি করতে চাই, যে বাংলাদেশে যারা এই দেশের নাগরিক তাদের সবার সমান অধিকার, এটা আমরা নিশ্চিত করছি।

এবারের দুর্গাপূজা সম্পর্কে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, এবার দুর্গাপূজার আনন্দ বিশেষ আনন্দে পরিণত হয়েছে, দেশজুড়ে যেটা সবাই উপভোগ করছে। এ আনন্দ আরেকটু বেড়ে গেলে এজন্য, একদম নির্বিঘ্নে সব জায়গায় পূজার অনুষ্ঠান হচ্ছে। সবাই চেষ্টা করেছে, কোনোরকম দুর্ঘটনা যাতে না ঘটে, কোনোরকম আতঙ্কজনক পরিস্থিতি যেন সৃষ্টি না হয়। এজন্য সরকার এবং সরকারের বাইরে সবাই আন্তরিকভাবে চেষ্টা করেছে।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

আজকের সূর্যোদয়

আজকের সূর্যোদয় প্রত্রিকায় আপনাদের স্বাগতম। ‍আমাদের নিউজ পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিয়ে আমাদের পাশে থাকুন।

বরিশালে মুজিবিয়ানের ৮৭ নেতাকে খুঁজছে গোয়েন্দা সংস্থা

‘স্বপ্নের রাষ্ট্রে’ পূজার ছুটি পাবে সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‌্যাবও: ড. ইউনূস

আপডেট সময় ১১:২৯:৫৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৪

দুর্গাপূজাসহ বিভিন্ন আনন্দ উৎসবের আয়োজনে আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদেরকেও যেন ছুটিতে পাঠানো যায় এমন রাষ্ট্রের ‘স্বপ্ন’ দেখছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সেনাবাহিনী, র‌্যাব ও পুলিশের সহায়তায় পূজার মতো উৎসবের আয়োজনকে আমাদের সমাজের ব্যর্থতা হিসেবে মন্তব্য করেছেন তিনি।

শনিবার (অক্টোবর ১২) বিকালে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে পূজা পরিদর্শন এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ধন্যবাদ দিয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, অত্যন্ত গৌরবপূর্ণ দুর্গাপূজা আমরা করতে পেরেছি সবাই মিলে। এর পেছনে সরকারের বড় একটা প্রতিষ্ঠান আমাদের সহযোগিতা করেছে। তারা হলো, পুলিশ, সেনাবাহিনী, র‌্যাব, বিজিবি যত রকমের সরকারের কাছে শান্তিরক্ষা বাহিনী ছিল সবাই।

এসময় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সবাই আন্তরিকভাবে কাজ করেছে। এটা কঠিন কাজ, সহজ কাজ না। কঠিন কাজ অত্যন্ত নিখুঁতভাবে করতে পেরেছে। এই কঠিন কাজটি অত্যন্ত নিখুঁতভাবে সমাধা করতে পেরেছে। সবাই মিলে কাজ করলে যে সফলতা পাওয়া যায়, সেটা তারা প্রমাণ করেছে। তারা কষ্ট করার কারণে আমরা ছুটি উপভোগ করতে পারছি। তাদের ধন্যবাদ জানাই। আমরা এমন একটি রাষ্ট্র গঠন করতে পারি খুব শিগগিরই যেখানে তারাও ছুটি উপভোগ করবে। আমরাও ছুটি উপভোগ করব।

“তাদের (আইনশৃঙ্খলা বাহিনী) ছুটি বিসর্জন দিয়ে আমাদের আনন্দ করতে হবে না। এ ‘অপরাধবোধ’ থেকে আমরা মুক্ত হয়ে যাব। দেশের নাগরিক হিসেবে উৎসব পালন করব। কেউ আমাদের বাধা দিতে পারবে না।

দুর্গাপূজাসহ বিভিন্ন উৎসব পালনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তা নেওয়া প্রসঙ্গে ড. ইউনূস বলেন, নিজেদের মনে করিয়ে দেই, সেনাবাহিনীকে দিয়ে, পুলিশকে দিয়ে, র‌্যাবকে দিয়ে আমাদের আনন্দ, উৎসব করার আয়োজন করতে যাওয়াটা আমাদের ব্যর্থতা।

এই ব্যর্থতাটাকে আমরা গ্রহণ করেছি, এটা আমাদের ব্যর্থতা। আমরা সমাজটাকে এমনভাবে গড়ে তুলতে পারি নাই যে, কোনো জায়গায় একটা অংশ আনন্দ-উৎসব করবে, কাউকে বাদ দিয়ে নয়, সবাইকে নিয়ে আনন্দ উৎসব করব। এরকম সমাজকে নিয়ে আমরা কী করব? এরকম সমাজ কি আমরা চাই। আমরা এরকম সমাজ চাই না।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, সমাজের যেকোনো অংশ উৎসব করবে, আমরা সবাই মিলে সেখানে শরিক হব, তারা যেন নির্বিঘ্নে, আনন্দসহকারে উৎসব করতে পারে, তারা নিজেরা এই আনন্দে অংশ নেবে এটাই তো হওয়ার কথা।

কিন্তু আমরা ওটা করতে পারছি না। এটা করতে পারছি না বলেই আমাদের ছাত্র-জনতার, শ্রমিক এরা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে একটা নতুন বাংলাদেশ গঠনের স্বপ্ন নিয়ে আজকে আমাদের সুযোগ করে দিয়েছে।

তিনি বলেন, এই যে আমরা আপনাদের শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাধ্যমে আপনাদের উৎসবের সুযোগ করে দিলাম। এটা যেন ভবিষ্যতে আর কখনো করতে না হয়, সে জন্য আমরা একযোগে কাজ করব।

ড. ইউনূস বলেন, আমরা এমন এক বাংলাদেশ তৈরি করতে চাই, যে বাংলাদেশে যারা এই দেশের নাগরিক তাদের সবার সমান অধিকার, এটা আমরা নিশ্চিত করছি।

এবারের দুর্গাপূজা সম্পর্কে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, এবার দুর্গাপূজার আনন্দ বিশেষ আনন্দে পরিণত হয়েছে, দেশজুড়ে যেটা সবাই উপভোগ করছে। এ আনন্দ আরেকটু বেড়ে গেলে এজন্য, একদম নির্বিঘ্নে সব জায়গায় পূজার অনুষ্ঠান হচ্ছে। সবাই চেষ্টা করেছে, কোনোরকম দুর্ঘটনা যাতে না ঘটে, কোনোরকম আতঙ্কজনক পরিস্থিতি যেন সৃষ্টি না হয়। এজন্য সরকার এবং সরকারের বাইরে সবাই আন্তরিকভাবে চেষ্টা করেছে।