ঢাকা , রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

শেখ পরিবারের নাম বাদ দিয়ে জেলার নামে ১৮ বিশ্ববিদ্যালয়

  • সূর্যোদয় ডেস্ক:
  • আপডেট সময় ১১:০৩:৪৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১ নভেম্বর ২০২৪
  • ১০৮৫ বার পড়া হয়েছে

নিজের পরিবারের নামে প্রতিষ্ঠান হলে সেখানে অনুমোদনের ক্ষেত্রে ছিল না কোনো জটিলতা। পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে শেখ হাসিনা এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হলে পাওয়া যেত বাড়তি সুবিধা। বিশেষ করে অনুমোদন থেকে শুরু করে আর্থিক বিষয়াদিতেও মিলতো অগ্রাধিকার। বিগত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে দেশে দেড় ডজনের বেশি উচ্চশিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার অনুমোদন দেয়া হয়, যেগুলো শেখ হাসিনা কিংবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে।

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিপ্লবের পর বিতর্কিত এই নামগুলো বাদ দেয়ার জন্য বিভিন্ন পক্ষ থেকে জোর দাবি ওঠে; কিন্তু নাম পরিবর্তন সংক্রান্ত বিষয়ে কিছু জটিলতা থাকায় এতে কিছুটা দেরি হয়। তবে গত ৩০ অক্টোবর প্রথম দফায় দেশের পাঁচটি সরকারি মেডিক্যাল কলেজের নাম থেকে শেখ হাসিনা ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুুজিবুর রহমানের নাম বাদ দিয়ে সংশ্লিষ্ট জেলার নামে নামকরণ করা হয়েছে। এখনো এক ডজনের বেশি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে, যেগুলোর নামকরণ করা হয়েছে শেখ হাসিনা কিংবা শেখ মুজিবুর রহমান অথবা শেখ পরিবারের অন্য কারো নামে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যে বেসরকারি পর্যায়ের এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। খুব কম সময়ের মধ্যেই হয়তো নাম পরিবর্তনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসবে।

সম্প্রতি দেশের ছয়টি সরকারি মেডিক্যাল কলেজের নাম পরিবর্তন করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব ডা: মো: সরোয়ার বারী স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। গত বুধবারের প্রজ্ঞাপনে যেসব সরকারি মেডিক্যাল কলেজের নাম পরিবর্তন করা হলো সেগুলো হলো- কর্নেল মালেক মেডিক্যাল কলেজ, মানিকগঞ্জ-এর পরিবর্তে মানিকগঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ; আব্দুল মালেক উকিল মেডিক্যাল কলেজ, নোয়াখালী-এর পরিবর্তে নোয়াখালী মেডিক্যাল কলেজ; শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজ, জামালপুর-এর পরিবর্তে জামালপুর মেডিক্যাল কলেজ; শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজ, টাঙ্গাইল-এর পরিবর্তে টাঙ্গাইল মেডিক্যাল কলেজ; বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ, ফরিদপুর-এর পরিবর্তে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ এবং এম আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ, দিনাজপুর-এর পরিবর্তে দিনাজপুর মেডিক্যাল কলেজ।

অপর দিকে অভিযোগ উঠেছে, বিগত আওয়ামী লীগের সময়ে ইউজিসি’র একটি সুবিধাবাদী চক্র কৌশলে এবং সহজে অনুমোদন পাইয়ে দেয়ার নাম করে শেখ পরিবারের নামে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোক্তাদের পরামর্শ দিয়েছেন এবং অর্থও হাতিয়ে নিয়েছেন। বিশেষ করে ইউজিসি’র তৎকালীন সচিব ফেরদৌস জামানসহ অনেক কর্মকর্তা অতি উৎসাহে এসব নাম অনুমোদন দিয়েছিলেন। তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অতীতে এভাবে একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে একই নাম ব্যবহার করা ঠিক হয়নি। এই নাম পরিবর্তন করা প্রয়োজন। তাদের মতে এসব নাম জেলার নামেই হওয়া উচিত। একই নাম কিভাবে এত বিশ্ববিদ্যালয়ে দেয়া হয়েছে তা নিয়ে অন্তর্র্বর্তী সরকারের উচ্চপর্যায়ে কাজ চলছে বলেও জানিয়েছে ইউজিসি।

অবশ্য ইউজিসি থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, শেখ হাসিনার প্রথম সরকারের আমলে ১৯৯৮ সালে ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় ও গাজীপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। এ ছাড়া অন্যান্য ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়ই প্রতিষ্ঠা করা হয় গত ১৫ বছর আওয়ামী লীগ টানা ক্ষমতায় থাকাকালে। আর শেখ হাসিনার নামে মেডিক্যাল কলেজ তিনটিও গত ১১ বছরের মধ্যে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালেই প্রতিষ্ঠিত। এগুলোর বাইরে মেহেরপুরে মুজিবনগর বিশ্ববিদ্যালয় নামে আরো একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।

বঙ্গবন্ধুর নামে প্রতিষ্ঠিত প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়েই শুরুতে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’ থাকায় এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচিতি নিয়ে বিভিন্ন সময়ে জনমনে বিভ্রান্তি তৈরি হতে দেখা গেছে। তার নামে আছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, মেরিটাইম, অ্যারোস্পেস, ডিজিটাল ইত্যাদি ইউনিভার্সিটি। সূত্র মতে, ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও গোপালগঞ্জে আছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (২০১১), ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয় (২০১৩), গাজীপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয় (২০১৮) ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এভিয়েশন ও অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয় (২০১৯), কিশোরগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় (২০২০), পিরোজপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (২০২২), নওগাঁয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় (২০২৩)। এগুলোর মধ্যে গোপালগঞ্জের ও পিরোজপুরের বিশ্ববিদ্যালয় দু’টির একই নাম- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

এ ছাড়াও শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণীর নামে জামালপুরে আছে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (২০১৭) এবং সিলেটে আছে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (২০১৮)। আর ক্ষমতাচ্যুত পলাতক প্রধানমন্ত্রীর নামে নেত্রকোনায় আছে শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয় (২০১৮) ও খুলনায় শেখ হাসিনা মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (২০২১)। এ ছাড়া শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজ নামে জামালপুর (২০১৪), টাঙ্গাইল (২০১৪) ও হবিগঞ্জে (২০১৭) তিনটি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এ বিষয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ইউজিসি’র সচিব ড. মো: ফখরুল ইসলাম নয়া দিগন্তের এই প্রতিবেদককে জানান, একই ব্যক্তির নামে একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম থাকা বিব্রতকর। এটা অতীতে করা হলেও বিষয়টি ঠিক হয়নি। তবে ইতোমধ্যে আমাদের মধ্যে কথাবার্তা শুরু হয়েছে। আমরা দেখছি কিভাবে এই নামগুলো পরিবর্তন করা যায়।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

আজকের সূর্যোদয়

আজকের সূর্যোদয় প্রত্রিকায় আপনাদের স্বাগতম। ‍আমাদের নিউজ পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিয়ে আমাদের পাশে থাকুন।

বরিশালে মুজিবিয়ানের ৮৭ নেতাকে খুঁজছে গোয়েন্দা সংস্থা

শেখ পরিবারের নাম বাদ দিয়ে জেলার নামে ১৮ বিশ্ববিদ্যালয়

আপডেট সময় ১১:০৩:৪৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১ নভেম্বর ২০২৪

নিজের পরিবারের নামে প্রতিষ্ঠান হলে সেখানে অনুমোদনের ক্ষেত্রে ছিল না কোনো জটিলতা। পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে শেখ হাসিনা এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হলে পাওয়া যেত বাড়তি সুবিধা। বিশেষ করে অনুমোদন থেকে শুরু করে আর্থিক বিষয়াদিতেও মিলতো অগ্রাধিকার। বিগত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে দেশে দেড় ডজনের বেশি উচ্চশিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার অনুমোদন দেয়া হয়, যেগুলো শেখ হাসিনা কিংবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে।

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিপ্লবের পর বিতর্কিত এই নামগুলো বাদ দেয়ার জন্য বিভিন্ন পক্ষ থেকে জোর দাবি ওঠে; কিন্তু নাম পরিবর্তন সংক্রান্ত বিষয়ে কিছু জটিলতা থাকায় এতে কিছুটা দেরি হয়। তবে গত ৩০ অক্টোবর প্রথম দফায় দেশের পাঁচটি সরকারি মেডিক্যাল কলেজের নাম থেকে শেখ হাসিনা ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুুজিবুর রহমানের নাম বাদ দিয়ে সংশ্লিষ্ট জেলার নামে নামকরণ করা হয়েছে। এখনো এক ডজনের বেশি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে, যেগুলোর নামকরণ করা হয়েছে শেখ হাসিনা কিংবা শেখ মুজিবুর রহমান অথবা শেখ পরিবারের অন্য কারো নামে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যে বেসরকারি পর্যায়ের এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। খুব কম সময়ের মধ্যেই হয়তো নাম পরিবর্তনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসবে।

সম্প্রতি দেশের ছয়টি সরকারি মেডিক্যাল কলেজের নাম পরিবর্তন করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব ডা: মো: সরোয়ার বারী স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। গত বুধবারের প্রজ্ঞাপনে যেসব সরকারি মেডিক্যাল কলেজের নাম পরিবর্তন করা হলো সেগুলো হলো- কর্নেল মালেক মেডিক্যাল কলেজ, মানিকগঞ্জ-এর পরিবর্তে মানিকগঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ; আব্দুল মালেক উকিল মেডিক্যাল কলেজ, নোয়াখালী-এর পরিবর্তে নোয়াখালী মেডিক্যাল কলেজ; শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজ, জামালপুর-এর পরিবর্তে জামালপুর মেডিক্যাল কলেজ; শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজ, টাঙ্গাইল-এর পরিবর্তে টাঙ্গাইল মেডিক্যাল কলেজ; বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ, ফরিদপুর-এর পরিবর্তে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ এবং এম আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ, দিনাজপুর-এর পরিবর্তে দিনাজপুর মেডিক্যাল কলেজ।

অপর দিকে অভিযোগ উঠেছে, বিগত আওয়ামী লীগের সময়ে ইউজিসি’র একটি সুবিধাবাদী চক্র কৌশলে এবং সহজে অনুমোদন পাইয়ে দেয়ার নাম করে শেখ পরিবারের নামে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোক্তাদের পরামর্শ দিয়েছেন এবং অর্থও হাতিয়ে নিয়েছেন। বিশেষ করে ইউজিসি’র তৎকালীন সচিব ফেরদৌস জামানসহ অনেক কর্মকর্তা অতি উৎসাহে এসব নাম অনুমোদন দিয়েছিলেন। তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অতীতে এভাবে একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে একই নাম ব্যবহার করা ঠিক হয়নি। এই নাম পরিবর্তন করা প্রয়োজন। তাদের মতে এসব নাম জেলার নামেই হওয়া উচিত। একই নাম কিভাবে এত বিশ্ববিদ্যালয়ে দেয়া হয়েছে তা নিয়ে অন্তর্র্বর্তী সরকারের উচ্চপর্যায়ে কাজ চলছে বলেও জানিয়েছে ইউজিসি।

অবশ্য ইউজিসি থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, শেখ হাসিনার প্রথম সরকারের আমলে ১৯৯৮ সালে ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় ও গাজীপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। এ ছাড়া অন্যান্য ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়ই প্রতিষ্ঠা করা হয় গত ১৫ বছর আওয়ামী লীগ টানা ক্ষমতায় থাকাকালে। আর শেখ হাসিনার নামে মেডিক্যাল কলেজ তিনটিও গত ১১ বছরের মধ্যে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালেই প্রতিষ্ঠিত। এগুলোর বাইরে মেহেরপুরে মুজিবনগর বিশ্ববিদ্যালয় নামে আরো একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।

বঙ্গবন্ধুর নামে প্রতিষ্ঠিত প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়েই শুরুতে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’ থাকায় এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচিতি নিয়ে বিভিন্ন সময়ে জনমনে বিভ্রান্তি তৈরি হতে দেখা গেছে। তার নামে আছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, মেরিটাইম, অ্যারোস্পেস, ডিজিটাল ইত্যাদি ইউনিভার্সিটি। সূত্র মতে, ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও গোপালগঞ্জে আছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (২০১১), ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয় (২০১৩), গাজীপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয় (২০১৮) ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এভিয়েশন ও অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয় (২০১৯), কিশোরগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় (২০২০), পিরোজপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (২০২২), নওগাঁয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় (২০২৩)। এগুলোর মধ্যে গোপালগঞ্জের ও পিরোজপুরের বিশ্ববিদ্যালয় দু’টির একই নাম- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

এ ছাড়াও শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণীর নামে জামালপুরে আছে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (২০১৭) এবং সিলেটে আছে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (২০১৮)। আর ক্ষমতাচ্যুত পলাতক প্রধানমন্ত্রীর নামে নেত্রকোনায় আছে শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয় (২০১৮) ও খুলনায় শেখ হাসিনা মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (২০২১)। এ ছাড়া শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজ নামে জামালপুর (২০১৪), টাঙ্গাইল (২০১৪) ও হবিগঞ্জে (২০১৭) তিনটি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এ বিষয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ইউজিসি’র সচিব ড. মো: ফখরুল ইসলাম নয়া দিগন্তের এই প্রতিবেদককে জানান, একই ব্যক্তির নামে একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম থাকা বিব্রতকর। এটা অতীতে করা হলেও বিষয়টি ঠিক হয়নি। তবে ইতোমধ্যে আমাদের মধ্যে কথাবার্তা শুরু হয়েছে। আমরা দেখছি কিভাবে এই নামগুলো পরিবর্তন করা যায়।