ঢাকা , সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

১২ শর্তে জেটি নির্মাণের অনুমতি পেল বেবিচক

  • সূর্যোদয় ডেস্ক:
  • আপডেট সময় ১০:৪৫:২১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • ১২৮৯ বার পড়া হয়েছে

দফায় দফায় চিঠি চালাচালির পর ১২ শর্তে কক্সবাজার বিমানবন্দর রানওয়ে সম্প্রসারণ প্রকল্পের বিদেশি মালামাল পরিবহনে অস্থায়ী জেটি নির্মাণে অনুমতি পেয়েছে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চট্টগ্রাম দপ্তরের নিয়ন্ত্রণাধীন কক্সবাজার (কন্তুরীঘাট) নদীবন্দরের বন্দর সীমানায় ‘কক্সবাজার বিমানবন্দর রানওয়ে সম্প্রসারণ’ শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিদেশ থেকে আমদানিকৃত প্রকল্প কাজে ব্যবহৃত মালামাল ও নির্মাণসামগ্রী প্রকল্প সন্নিকট এলাকায় লোডিং-আনলোডিং করার জন্য অস্থায়ী জেটি নির্মাণসহ আনুষঙ্গিক স্থাপনাদি নির্মাণের অনুমতি বা লাইসেন্স প্রদানে ১২ শর্ত আরোপ করে গত সোমবার বিআইডব্লিউটিএর চট্টগ্রামের ফিরীঙ্গিবাজার বীজঘাটের উপপরিচালকের (বওপ) কাছে একটি চিঠি দিয়েছে বিআইডব্লিউটিএর উপপরিচালক (বন্দর) মো. আজমল হুদা মিঠু সরকার।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, অস্থায়ী জেটি নির্মাণসহ আনুষঙ্গিক স্থাপনাদি নির্মাণের লক্ষ্যে ৭০৬ রানিং/দৌড় ফুট সিট পাইলিং, ২ হাজার ৬৪০ বর্গ মিটার অস্থায়ী জেটি নির্মাণ এবং ১ হাজার ১৬ শতাংশ ফোরশোর/তীরভূমির ব্যবহারের অনুমতি প্রদানের বিষয়ে ১২ শর্ত প্রতিপালনসাপেক্ষে যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমতি প্রদান করা

হয়েছে। শর্তগুলো হলো- প্রাথমিক অবস্থায় আলোচ্য লাইসেন্সের মেয়াদ হবে ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি হতে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হওয়ার কমপক্ষে ১ মাস আগে প্রতিষ্ঠানটির আবেদন ও অত্র কর্তৃপক্ষের বিবেচনাসাপেক্ষে প্রতিবছর নবায়ন করা হবে; ১ হাজার ১৬ শতাংশের অতিরিক্ত ফোরশোর ব্যবহার করা যাবে না; অস্থায়ী জেটি নির্মাণকালীন সময়ে অত্র কর্তৃপক্ষের স্থানীয় ত্রিবিভাগীয় কমিটি কর্তৃক পরিদর্শনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে; অস্থায়ী জেটি এলাকায় প্রয়োজনে ওই প্রতিষ্ঠানকে নিজ খরচে অত্র কর্তৃপক্ষের হাইড্রোগ্রাফিক বিভাগের মাধ্যমে জরিপ সম্পন্ন করতে হবে; অস্থায়ী জেটি এলাকা চ্যানেলে নাব্যসংকট দেখা দিলে বিআইডব্লিউটিএর অনুমতি গ্রহণসাপেক্ষে ওই প্রতিষ্ঠানকে নিজ খরচে ড্রেজিং করে নাব্যতা উন্নয়নের ব্যবস্থা করতে হবে; অস্থায়ী জেটির প্রয়োজনীয়তা শেষে স্থাপিত সব স্থাপনা এবং ভরাটকৃত মাটি অপসারণপূর্বক নদীকে পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে দিতে হবে; প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম শুরু হওয়ার সময় থেকে পরিবাহিত মালামালের শুল্ক/চার্জ এবং জেটি কাঠামোর লাইসেন্স ফি আরোপযোগ্য ও পরিশোধ করতে হবে, যা বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃক নির্ধারিত।

বছর শেষে প্রকৃত জেটি/স্থাপনার পরিমাণ ও পরিবাহিত মালের পরিমাণের ওপর শুল্ক পরিশোধ করতে হবে ও প্রক্রিয়াটি প্রতি বছর নবায়নযোগ্য হবে; অস্থায়ী জেটির অবস্থান ২১ ফিট, ২৮ ফিট, ৮ ফিট এবং ৯১ ফিট, ৫৭ ফিট, ২৬ ফিটÑএর পশ্চিমে হতে হবে; পরিবেশ অধিদপ্তর, ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সসহ সরকারের অন্যান্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের অনুমতি ছাড়পত্র আবশ্যিকভাবে গ্রহণ করতে হবে: কর্তৃপক্ষের অনুমোদন প্রাপ্তির পর মালামাল ওঠানামার ওপর কর্তৃপক্ষের নির্ধারিত হারে শুল্ক প্রদান করতে হবে এবং মেয়াদ বলবৎ থাকাকালীন সরকার কর্তৃক শুল্কের হার বৃদ্ধি পেলে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে বর্ধিত হারে শুল্ক পরিশোধ করতে হবে; যে কোনো উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আবেদনকারীকে সংশ্লিষ্ট সংস্থা/কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে; নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের এক সিদ্ধান্ত মোতাবেক বেবিচক কক্সবাজার এবং বিআইডব্লিউটিএর মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করতে হবে। এই পরিস্থিতিতে কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চট্টগ্রাম দপ্তরের নিয়ন্ত্রণাধীন কক্সবাজার (কস্তুরীঘাট) নদীবন্দরের বন্দর সীমানায় “কক্সবাজার বিমানবন্দর রানওয়ে সম্প্রসারণ’’ শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বেবিচক কক্সবাজার বিমানবন্দর, কক্সবাজারের কাছ থেকে কর্তৃপক্ষের প্রাপ্যযোগ্য লাইসেন্স ফি বাবদ ৭১ লাখ ২১ হাজার ৩৮১ টাকা ১৫ শতাংশ ভ্যাট বাবদ ১০ লাখ ৬৮ হাজার ২০৭ টাকা এবং ৫ শতাংশ আয়কর বাবদ ৩ লাখ ৫৬ হাজার ৬৯ টাকা অগ্রিম আদায়সাপেক্ষে উল্লিখিত শর্তসহ কর্তৃপক্ষের প্রচলিত অন্যান্য শর্ত উল্লেখ করে উপযুক্ত মূল্যমানের ননজুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করে প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে নৌপথে পরিবাহিত মালামাল লোডিং-আনলোডিং করার অনুমতি প্রদানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।

কক্সবাজার বিমানবন্দর রানওয়ে সম্প্রসারণ প্রকল্পের পরিচালক মো. ইউনুছ ভূঁইয়া আমাদের সময়কে বলেন, অস্থায়ী জেটি নির্মাণে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ আমাদের বেশকিছু শর্ত দিয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

জানা গেছে, বাংলাদেশে সবচেয়ে দীর্ঘ রানওয়েটি হতে যাচ্ছে কক্সবাজার বিমানবন্দরে। এই রানওয়ের একটি অংশ থাকবে বঙ্গোপসাগরের ভেতরে। ১০ হাজার ৭০০ ফুট দীর্ঘ এই রানওয়ের ১৩শ ফুট থাকবে সমুদ্রের মধ্যে। এটি হতে যাচ্ছে বাংলাদেশের দীর্ঘতম রানওয়ে। বর্তমানে সবচেয়ে দীর্ঘ রানওয়েটি রয়েছে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। এটির দৈর্ঘ্য ১০ হাজার ৫০০ ফুট। রানওয়ের নির্মাণকাজ শেষ হলে কক্সবাজার বিমানবন্দরের রানওয়েতে অবতরণ বা উড্ডয়নকালে উড়োজাহাজের দুপাশে থাকবে বঙ্গোপসাগরের জলরাশি। দফায় দফায় চিঠি চালাচালির পরও কক্সবাজার বিমানবন্দর রানওয়ে সম্প্রসারণ প্রকল্পের মালামাল পরিবহনে জেটি নির্মাণের জট খোলেনি এত দিন। এই বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ করছে সরকার। ২০২১ সালে শুরু হওয়া সমুদ্রে রানওয়ে সম্প্রসারণ কাজের অগ্রগতি হয়েছে মাত্র ৩৬ শতাংশ (২০২২ সালের অক্টোবর মাস পর্যন্ত)। এই প্রকল্পের জন্য বিভিন্ন মালামাল বিদেশ থেকে আমদানি করা হচ্ছে। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থান থেকেও মালামাল আসবে। এসব মালামাল নৌপথে প্রকল্প এলাকায় নেওয়ার জন্য অস্থায়ী জেটি স্থাপন করতে চায় চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু প্রকল্পসংশ্লিষ্ট ঠিকাদার সম্পূর্ণ বিদেশি হওয়ায় আপত্তি জানিয়েছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রতিষ্ঠান বিআইডব্লিউটিএ। গত বছরের ৮ নভেম্বর কক্সবাজার বিমানবন্দর রানওয়ে সম্প্রসারণ প্রকল্প পরিচালক (পিডি) মো. ইউনুছ ভূঁইয়া বিষয়টি বেবিচক পরিচালককে পত্র দিয়ে অবহিত করেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা আমাদের সময়কে জানান, অস্থায়ী জেটি স্থাপনের জন্য লাইসেন্স লাগবে। এই লাইসেন্সের জন্য বেবিচকের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে এবং অস্থায়ী জেটির টোলও দিতে হবে। প্রকল্পসংশ্লিষ্ট ঠিকাদার সম্পূর্ণ বিদেশি হওয়ায় তাদের আবেদন এ ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য হবে না। আর প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রকল্পের কাজ করছে চীনা কোম্পানি। তারা অস্থায়ী ভিত্তিতে জেটি স্থাপন এবং কাজ শেষে নিজেরাই জেটি অপসারণ করবে, এই মর্মে আবেদন জানিয়েছে। নৌপরিবহন অধিদপ্তর এতে আপত্তি জানিয়েছে। ঊর্ধ্বতনরা বিধি অনুযায়ী বিষয়টি নিষ্পত্তি করবেন।

বেবিচককে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, গত ১২ অক্টোবর ২০২২-২৩ অর্থবছরের এডিপিতে অন্তর্ভুক্ত বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রকল্পসমূহের আগস্ট ও সেপ্টেম্বর-২০২২ এর বাস্তবায়নের অগ্রগতি পর্যালোচনা সভায় এই প্রকল্পের ঠিকাদার কর্তৃক নির্মিত অস্থায়ী জেটি অনুমোদনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এতে নির্মাণকাজের মালামাল নৌপথে লাইটার ভেসেলের মাধ্যমে সাইটে আনার জন্য প্রকল্পের নিকটবর্তী এলাকায় অস্থায়ী জেটি অনুমোদনের বিষয়ে প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

চিঠিতে আরও বলা হয়, বেবিচক জেটিটি নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণ করবে এবং কাজ শেষে জেটি অপসারণ করবে এই শর্তে বেবিচক ও নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের মধ্যে এমওইউ স্বাক্ষরিত হবে। এর ভিত্তিতে সাইটে একটি অস্থায়ী জেটি নির্মাণের অনুমতি দেওয়ার জন্য বিআইডব্লিউটিএকে অনুরোধ জানানো হয়। কিন্তু প্রকল্প পরিচালক এমওইউর বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএর সঙ্গে আলোচনা করলে তারা দ্বিমত পোষণ করে জানায়, জেটির লাইসেন্সের জন্য বেবিচক কর্তৃক আবেদন করতে হবে এবং অস্থায়ী জেটির টোলও প্রদান করতে হবে। যেহেতু প্রকল্পসংশ্লিষ্ট ঠিকাদার সম্পূর্ণ বিদেশি, সেহেতু তাদের আবেদন এ ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য হবে না।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

আজকের সূর্যোদয়

আজকের সূর্যোদয় প্রত্রিকায় আপনাদের স্বাগতম। ‍আমাদের নিউজ পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিয়ে আমাদের পাশে থাকুন।

বরিশালে মুজিবিয়ানের ৮৭ নেতাকে খুঁজছে গোয়েন্দা সংস্থা

১২ শর্তে জেটি নির্মাণের অনুমতি পেল বেবিচক

আপডেট সময় ১০:৪৫:২১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

দফায় দফায় চিঠি চালাচালির পর ১২ শর্তে কক্সবাজার বিমানবন্দর রানওয়ে সম্প্রসারণ প্রকল্পের বিদেশি মালামাল পরিবহনে অস্থায়ী জেটি নির্মাণে অনুমতি পেয়েছে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চট্টগ্রাম দপ্তরের নিয়ন্ত্রণাধীন কক্সবাজার (কন্তুরীঘাট) নদীবন্দরের বন্দর সীমানায় ‘কক্সবাজার বিমানবন্দর রানওয়ে সম্প্রসারণ’ শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিদেশ থেকে আমদানিকৃত প্রকল্প কাজে ব্যবহৃত মালামাল ও নির্মাণসামগ্রী প্রকল্প সন্নিকট এলাকায় লোডিং-আনলোডিং করার জন্য অস্থায়ী জেটি নির্মাণসহ আনুষঙ্গিক স্থাপনাদি নির্মাণের অনুমতি বা লাইসেন্স প্রদানে ১২ শর্ত আরোপ করে গত সোমবার বিআইডব্লিউটিএর চট্টগ্রামের ফিরীঙ্গিবাজার বীজঘাটের উপপরিচালকের (বওপ) কাছে একটি চিঠি দিয়েছে বিআইডব্লিউটিএর উপপরিচালক (বন্দর) মো. আজমল হুদা মিঠু সরকার।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, অস্থায়ী জেটি নির্মাণসহ আনুষঙ্গিক স্থাপনাদি নির্মাণের লক্ষ্যে ৭০৬ রানিং/দৌড় ফুট সিট পাইলিং, ২ হাজার ৬৪০ বর্গ মিটার অস্থায়ী জেটি নির্মাণ এবং ১ হাজার ১৬ শতাংশ ফোরশোর/তীরভূমির ব্যবহারের অনুমতি প্রদানের বিষয়ে ১২ শর্ত প্রতিপালনসাপেক্ষে যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমতি প্রদান করা

হয়েছে। শর্তগুলো হলো- প্রাথমিক অবস্থায় আলোচ্য লাইসেন্সের মেয়াদ হবে ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি হতে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হওয়ার কমপক্ষে ১ মাস আগে প্রতিষ্ঠানটির আবেদন ও অত্র কর্তৃপক্ষের বিবেচনাসাপেক্ষে প্রতিবছর নবায়ন করা হবে; ১ হাজার ১৬ শতাংশের অতিরিক্ত ফোরশোর ব্যবহার করা যাবে না; অস্থায়ী জেটি নির্মাণকালীন সময়ে অত্র কর্তৃপক্ষের স্থানীয় ত্রিবিভাগীয় কমিটি কর্তৃক পরিদর্শনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে; অস্থায়ী জেটি এলাকায় প্রয়োজনে ওই প্রতিষ্ঠানকে নিজ খরচে অত্র কর্তৃপক্ষের হাইড্রোগ্রাফিক বিভাগের মাধ্যমে জরিপ সম্পন্ন করতে হবে; অস্থায়ী জেটি এলাকা চ্যানেলে নাব্যসংকট দেখা দিলে বিআইডব্লিউটিএর অনুমতি গ্রহণসাপেক্ষে ওই প্রতিষ্ঠানকে নিজ খরচে ড্রেজিং করে নাব্যতা উন্নয়নের ব্যবস্থা করতে হবে; অস্থায়ী জেটির প্রয়োজনীয়তা শেষে স্থাপিত সব স্থাপনা এবং ভরাটকৃত মাটি অপসারণপূর্বক নদীকে পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে দিতে হবে; প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম শুরু হওয়ার সময় থেকে পরিবাহিত মালামালের শুল্ক/চার্জ এবং জেটি কাঠামোর লাইসেন্স ফি আরোপযোগ্য ও পরিশোধ করতে হবে, যা বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃক নির্ধারিত।

বছর শেষে প্রকৃত জেটি/স্থাপনার পরিমাণ ও পরিবাহিত মালের পরিমাণের ওপর শুল্ক পরিশোধ করতে হবে ও প্রক্রিয়াটি প্রতি বছর নবায়নযোগ্য হবে; অস্থায়ী জেটির অবস্থান ২১ ফিট, ২৮ ফিট, ৮ ফিট এবং ৯১ ফিট, ৫৭ ফিট, ২৬ ফিটÑএর পশ্চিমে হতে হবে; পরিবেশ অধিদপ্তর, ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সসহ সরকারের অন্যান্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের অনুমতি ছাড়পত্র আবশ্যিকভাবে গ্রহণ করতে হবে: কর্তৃপক্ষের অনুমোদন প্রাপ্তির পর মালামাল ওঠানামার ওপর কর্তৃপক্ষের নির্ধারিত হারে শুল্ক প্রদান করতে হবে এবং মেয়াদ বলবৎ থাকাকালীন সরকার কর্তৃক শুল্কের হার বৃদ্ধি পেলে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে বর্ধিত হারে শুল্ক পরিশোধ করতে হবে; যে কোনো উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আবেদনকারীকে সংশ্লিষ্ট সংস্থা/কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে; নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের এক সিদ্ধান্ত মোতাবেক বেবিচক কক্সবাজার এবং বিআইডব্লিউটিএর মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করতে হবে। এই পরিস্থিতিতে কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চট্টগ্রাম দপ্তরের নিয়ন্ত্রণাধীন কক্সবাজার (কস্তুরীঘাট) নদীবন্দরের বন্দর সীমানায় “কক্সবাজার বিমানবন্দর রানওয়ে সম্প্রসারণ’’ শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বেবিচক কক্সবাজার বিমানবন্দর, কক্সবাজারের কাছ থেকে কর্তৃপক্ষের প্রাপ্যযোগ্য লাইসেন্স ফি বাবদ ৭১ লাখ ২১ হাজার ৩৮১ টাকা ১৫ শতাংশ ভ্যাট বাবদ ১০ লাখ ৬৮ হাজার ২০৭ টাকা এবং ৫ শতাংশ আয়কর বাবদ ৩ লাখ ৫৬ হাজার ৬৯ টাকা অগ্রিম আদায়সাপেক্ষে উল্লিখিত শর্তসহ কর্তৃপক্ষের প্রচলিত অন্যান্য শর্ত উল্লেখ করে উপযুক্ত মূল্যমানের ননজুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করে প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে নৌপথে পরিবাহিত মালামাল লোডিং-আনলোডিং করার অনুমতি প্রদানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।

কক্সবাজার বিমানবন্দর রানওয়ে সম্প্রসারণ প্রকল্পের পরিচালক মো. ইউনুছ ভূঁইয়া আমাদের সময়কে বলেন, অস্থায়ী জেটি নির্মাণে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ আমাদের বেশকিছু শর্ত দিয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

জানা গেছে, বাংলাদেশে সবচেয়ে দীর্ঘ রানওয়েটি হতে যাচ্ছে কক্সবাজার বিমানবন্দরে। এই রানওয়ের একটি অংশ থাকবে বঙ্গোপসাগরের ভেতরে। ১০ হাজার ৭০০ ফুট দীর্ঘ এই রানওয়ের ১৩শ ফুট থাকবে সমুদ্রের মধ্যে। এটি হতে যাচ্ছে বাংলাদেশের দীর্ঘতম রানওয়ে। বর্তমানে সবচেয়ে দীর্ঘ রানওয়েটি রয়েছে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। এটির দৈর্ঘ্য ১০ হাজার ৫০০ ফুট। রানওয়ের নির্মাণকাজ শেষ হলে কক্সবাজার বিমানবন্দরের রানওয়েতে অবতরণ বা উড্ডয়নকালে উড়োজাহাজের দুপাশে থাকবে বঙ্গোপসাগরের জলরাশি। দফায় দফায় চিঠি চালাচালির পরও কক্সবাজার বিমানবন্দর রানওয়ে সম্প্রসারণ প্রকল্পের মালামাল পরিবহনে জেটি নির্মাণের জট খোলেনি এত দিন। এই বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ করছে সরকার। ২০২১ সালে শুরু হওয়া সমুদ্রে রানওয়ে সম্প্রসারণ কাজের অগ্রগতি হয়েছে মাত্র ৩৬ শতাংশ (২০২২ সালের অক্টোবর মাস পর্যন্ত)। এই প্রকল্পের জন্য বিভিন্ন মালামাল বিদেশ থেকে আমদানি করা হচ্ছে। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থান থেকেও মালামাল আসবে। এসব মালামাল নৌপথে প্রকল্প এলাকায় নেওয়ার জন্য অস্থায়ী জেটি স্থাপন করতে চায় চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু প্রকল্পসংশ্লিষ্ট ঠিকাদার সম্পূর্ণ বিদেশি হওয়ায় আপত্তি জানিয়েছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রতিষ্ঠান বিআইডব্লিউটিএ। গত বছরের ৮ নভেম্বর কক্সবাজার বিমানবন্দর রানওয়ে সম্প্রসারণ প্রকল্প পরিচালক (পিডি) মো. ইউনুছ ভূঁইয়া বিষয়টি বেবিচক পরিচালককে পত্র দিয়ে অবহিত করেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা আমাদের সময়কে জানান, অস্থায়ী জেটি স্থাপনের জন্য লাইসেন্স লাগবে। এই লাইসেন্সের জন্য বেবিচকের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে এবং অস্থায়ী জেটির টোলও দিতে হবে। প্রকল্পসংশ্লিষ্ট ঠিকাদার সম্পূর্ণ বিদেশি হওয়ায় তাদের আবেদন এ ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য হবে না। আর প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রকল্পের কাজ করছে চীনা কোম্পানি। তারা অস্থায়ী ভিত্তিতে জেটি স্থাপন এবং কাজ শেষে নিজেরাই জেটি অপসারণ করবে, এই মর্মে আবেদন জানিয়েছে। নৌপরিবহন অধিদপ্তর এতে আপত্তি জানিয়েছে। ঊর্ধ্বতনরা বিধি অনুযায়ী বিষয়টি নিষ্পত্তি করবেন।

বেবিচককে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, গত ১২ অক্টোবর ২০২২-২৩ অর্থবছরের এডিপিতে অন্তর্ভুক্ত বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রকল্পসমূহের আগস্ট ও সেপ্টেম্বর-২০২২ এর বাস্তবায়নের অগ্রগতি পর্যালোচনা সভায় এই প্রকল্পের ঠিকাদার কর্তৃক নির্মিত অস্থায়ী জেটি অনুমোদনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এতে নির্মাণকাজের মালামাল নৌপথে লাইটার ভেসেলের মাধ্যমে সাইটে আনার জন্য প্রকল্পের নিকটবর্তী এলাকায় অস্থায়ী জেটি অনুমোদনের বিষয়ে প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

চিঠিতে আরও বলা হয়, বেবিচক জেটিটি নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণ করবে এবং কাজ শেষে জেটি অপসারণ করবে এই শর্তে বেবিচক ও নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের মধ্যে এমওইউ স্বাক্ষরিত হবে। এর ভিত্তিতে সাইটে একটি অস্থায়ী জেটি নির্মাণের অনুমতি দেওয়ার জন্য বিআইডব্লিউটিএকে অনুরোধ জানানো হয়। কিন্তু প্রকল্প পরিচালক এমওইউর বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএর সঙ্গে আলোচনা করলে তারা দ্বিমত পোষণ করে জানায়, জেটির লাইসেন্সের জন্য বেবিচক কর্তৃক আবেদন করতে হবে এবং অস্থায়ী জেটির টোলও প্রদান করতে হবে। যেহেতু প্রকল্পসংশ্লিষ্ট ঠিকাদার সম্পূর্ণ বিদেশি, সেহেতু তাদের আবেদন এ ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য হবে না।