ঢাকা , সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

ডিসি অফিসের ৩ সার্ভেয়ার কারাগারে

  • সূর্যোদয় ডেস্ক:
  • আপডেট সময় ০২:৩৭:০০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • ১১৪৬ বার পড়া হয়েছে

ক্ষমতার অপব্যবহার করে ভূমি অধিগ্রহণ ক্ষতিপূরণের টাকা অন্যজনকে দিয়ে দেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের তিনজন সার্ভেয়ার। এ ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) মামলা হলে টাকা নেওয়া ব্যক্তি তা ফেরতও দিয়ে দেন। এতে দুদকের তদন্ত কর্মকর্তা মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়ে অভিযোগ থেকে আসামিদের অব্যাহতির আবেদন করেন। তবে আদালত তদন্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেন।

মামলার অভিযোগ সরাসরি আমলে নিয়ে তিন সার্ভেয়ারের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। গ্রেফতারি পরোয়ানার পর উচ্চ আদালত থেকে চার সপ্তাহের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মেলে। তবে অন্তর্বর্তীকালীন জামিনের মেয়াদ শেষে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে তাদের জামিন মেলেনি।

এক কোটি ১৩ লাখ ১৪ হাজার ২৭৩ টাকা দুর্নীতির মামলায় সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) মহানগর দায়রা জজ ড. বেগম জেবুননেছার আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন তিনি সার্ভেয়ার। বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

তিন সার্ভেয়ার হলেন- কুমিল্লার চান্দিনার মুরাদনগর এলাকার মৃত হাজী মো. খোরশেদ আলমের ছেলে মো. মজিবর রহমান (৪০), নোয়াখালীর সদর থানার সাহতাপুর এলাকার মৃত আবদুল মান্নান ভূঁইয়ার ছেলে মো. আমাতুল মাওলা (৩৬) ও চট্টগ্রামের ধলঘাট এলাকার বিশ্বেশ্বর চৌধুরীর ছেলে আশীষ চৌধুরী (৫০)।

এর মধ্যে মো. মজিবর রহমান ও মো. আমাতুল মাওলা চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এলএ শাখায় কর্মরত ছিলেন। আশীষ চৌধুরী প্রেষণে রাঙ্গুনিয়া উপজেলা ভূমি অফিসে কর্মরত ছিলেন।

দুদকের আইনজীবী মাহমুদুল হক মাহমুদ জাগো নিউজকে বলেন, তিন সার্ভেয়ার হাইকোর্ট থেকে চার সপ্তাহের অন্তর্বর্তীকালীন জামিনে ছিলেন। সোমবার সকালে নির্ধারিত সময়ে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। আদালত শুনানি শেষে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

তিনি বলেন, এক কোটি ১৩ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা হলেও যিনি টাকা গ্রহণ করেছিলেন, ওই ব্যক্তি পরে টাকা ফেরত দিয়েছিলেন। এ কারণে দুদকের তদন্ত কর্মকর্তা মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছিলেন। আদালত তা প্রত্যাখ্যান করে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। টাকা ফেরত দিলেও এখানে ক্ষমতার অপব্যবহারের ঘটনা ঘটেছিল। যে কারণে আদালত দুদকের তদন্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেন।

মামলার নথি থেকে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর প্রতারণা ও সরকারি ক্ষমতার অব্যবহার করে চট্টগ্রাম ভূমি অধিগ্রহণ শাখার এলএ শাখায় উত্তর পতেঙ্গা মৌজার একটি জমির ক্ষতিপূরণ বাবদ এক কোটি ১৩ লাখ ১৪ হাজার ২৭৩ টাকা মিজানুর রহমান মাসুদ নামে এক ব্যক্তিকে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় অভিযোগ অনুসন্ধান শেষে তিন সার্ভেয়ারের বিরুদ্ধে মামলার সুপারিশ করা হয়। পরে কমিশনের অনুমোদন নিয়ে তিন সার্ভেয়ারের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।

মামলা তদন্ত চলাকালে টাকা নেওয়া ব্যক্তি পুরো টাকা ফেরত দেন। এতে ২০২২ সালের ৩১ জুলাই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ আদালতে মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়ে আসামিদের অব্যাহতির আবেদন করা হয়। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর ২০২২ সালের ১৯ অক্টোবর চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত মামলার নথি চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে বদলি করা হয়।

মহানগর দায়রা জজ আদালত তদন্ত কর্মকর্তার প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে আসামির বিরুদ্ধে ৪০৯/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/১০৯ দণ্ডবিধিসহ ১৯৪৭ সালে দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় অভিযোগ গঠন করেন। ২০২৩ সালের ২৯ জানুয়ারি উচ্চ আদালত থেকে চার সপ্তাহ অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পান তিন আসামি। এ জামিনের মেয়াদ শেষে মহানগর দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। এরপর তাদের কারাগারে পাঠান আদালত।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

আজকের সূর্যোদয়

আজকের সূর্যোদয় প্রত্রিকায় আপনাদের স্বাগতম। ‍আমাদের নিউজ পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিয়ে আমাদের পাশে থাকুন।

বরিশালে মুজিবিয়ানের ৮৭ নেতাকে খুঁজছে গোয়েন্দা সংস্থা

ডিসি অফিসের ৩ সার্ভেয়ার কারাগারে

আপডেট সময় ০২:৩৭:০০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

ক্ষমতার অপব্যবহার করে ভূমি অধিগ্রহণ ক্ষতিপূরণের টাকা অন্যজনকে দিয়ে দেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের তিনজন সার্ভেয়ার। এ ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) মামলা হলে টাকা নেওয়া ব্যক্তি তা ফেরতও দিয়ে দেন। এতে দুদকের তদন্ত কর্মকর্তা মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়ে অভিযোগ থেকে আসামিদের অব্যাহতির আবেদন করেন। তবে আদালত তদন্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেন।

মামলার অভিযোগ সরাসরি আমলে নিয়ে তিন সার্ভেয়ারের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। গ্রেফতারি পরোয়ানার পর উচ্চ আদালত থেকে চার সপ্তাহের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মেলে। তবে অন্তর্বর্তীকালীন জামিনের মেয়াদ শেষে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে তাদের জামিন মেলেনি।

এক কোটি ১৩ লাখ ১৪ হাজার ২৭৩ টাকা দুর্নীতির মামলায় সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) মহানগর দায়রা জজ ড. বেগম জেবুননেছার আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন তিনি সার্ভেয়ার। বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

তিন সার্ভেয়ার হলেন- কুমিল্লার চান্দিনার মুরাদনগর এলাকার মৃত হাজী মো. খোরশেদ আলমের ছেলে মো. মজিবর রহমান (৪০), নোয়াখালীর সদর থানার সাহতাপুর এলাকার মৃত আবদুল মান্নান ভূঁইয়ার ছেলে মো. আমাতুল মাওলা (৩৬) ও চট্টগ্রামের ধলঘাট এলাকার বিশ্বেশ্বর চৌধুরীর ছেলে আশীষ চৌধুরী (৫০)।

এর মধ্যে মো. মজিবর রহমান ও মো. আমাতুল মাওলা চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এলএ শাখায় কর্মরত ছিলেন। আশীষ চৌধুরী প্রেষণে রাঙ্গুনিয়া উপজেলা ভূমি অফিসে কর্মরত ছিলেন।

দুদকের আইনজীবী মাহমুদুল হক মাহমুদ জাগো নিউজকে বলেন, তিন সার্ভেয়ার হাইকোর্ট থেকে চার সপ্তাহের অন্তর্বর্তীকালীন জামিনে ছিলেন। সোমবার সকালে নির্ধারিত সময়ে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। আদালত শুনানি শেষে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

তিনি বলেন, এক কোটি ১৩ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা হলেও যিনি টাকা গ্রহণ করেছিলেন, ওই ব্যক্তি পরে টাকা ফেরত দিয়েছিলেন। এ কারণে দুদকের তদন্ত কর্মকর্তা মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছিলেন। আদালত তা প্রত্যাখ্যান করে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। টাকা ফেরত দিলেও এখানে ক্ষমতার অপব্যবহারের ঘটনা ঘটেছিল। যে কারণে আদালত দুদকের তদন্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেন।

মামলার নথি থেকে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর প্রতারণা ও সরকারি ক্ষমতার অব্যবহার করে চট্টগ্রাম ভূমি অধিগ্রহণ শাখার এলএ শাখায় উত্তর পতেঙ্গা মৌজার একটি জমির ক্ষতিপূরণ বাবদ এক কোটি ১৩ লাখ ১৪ হাজার ২৭৩ টাকা মিজানুর রহমান মাসুদ নামে এক ব্যক্তিকে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় অভিযোগ অনুসন্ধান শেষে তিন সার্ভেয়ারের বিরুদ্ধে মামলার সুপারিশ করা হয়। পরে কমিশনের অনুমোদন নিয়ে তিন সার্ভেয়ারের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।

মামলা তদন্ত চলাকালে টাকা নেওয়া ব্যক্তি পুরো টাকা ফেরত দেন। এতে ২০২২ সালের ৩১ জুলাই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ আদালতে মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়ে আসামিদের অব্যাহতির আবেদন করা হয়। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর ২০২২ সালের ১৯ অক্টোবর চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত মামলার নথি চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে বদলি করা হয়।

মহানগর দায়রা জজ আদালত তদন্ত কর্মকর্তার প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে আসামির বিরুদ্ধে ৪০৯/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/১০৯ দণ্ডবিধিসহ ১৯৪৭ সালে দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় অভিযোগ গঠন করেন। ২০২৩ সালের ২৯ জানুয়ারি উচ্চ আদালত থেকে চার সপ্তাহ অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পান তিন আসামি। এ জামিনের মেয়াদ শেষে মহানগর দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। এরপর তাদের কারাগারে পাঠান আদালত।